রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫:২৭ পূর্বাহ্ন

প্রবন্ধ: এক প্রিয়দর্শিনী আজ দিশেহারা

প্রবন্ধ: এক প্রিয়দর্শিনী আজ দিশেহারা

১ম পর্ব: প্রিয়দর্শিনীর গুনগত পরিচয়।
উনি একজন সামাজিক ও নাট্য ব্যক্তিত্ব, সুরেলা উচ্চাঙ্গ সংগীত শিল্পী, বাস্তবধর্মী কথাসাহিত্যিক, রূপচর্চায় তাঁর অনবদ্য হাত, কফির আড্ডায় যিনি ঝড় তুলেন- সেই প্রিয়দর্শিনী হলেন- মিস `M’

২য় পর্ব: প্রিয়দর্শিনী নাম করতে চায়।
প্রিয়দর্শিনীর পুরো নাম মিসেস A.N.M তবে তথাকথিত এলিট সোসাইটিতে উনি মিস M নামে পরিচিতিতে ভালবাসেন। কদাচিৎ মদের বারে ড্যান্স করতেও উনার কোন লজ্জা শরমের বালাই নেই। ইদানিংকালে ভদ্র মহোদয়ার ইচ্ছা জেগেছে- সমাজে উচ্চ তলার ধনবান মানুষের সাথে একটি হটলাইন সৃষ্টি করার। তার কাঙ্কিত অনুভূতি তাকে তাড়া দিয়ে বেড়াচ্ছে- ঐ ক্ষমতাবান ও ধনবান ব্যক্তিবর্গের সাথে লংড্রাইভে যাওয়ার ইচ্ছা। কিংবা সমুদ্র সৈকতে হাত ধরে বেড়ানো। কিন্তু উনি ভীষণ চিন্তায় পড়ে গেলেন কিভাবে সেই পথে হাটবেন। মহোদয়ার টাকা আছে, রূপ আছে কিন্তু উপর তলায় উঠার সিঁড়িটা জানা নেই। নিঝুম রাতে অনিদ্রায় ও দুশ্চিন্তায় চিন্তাগ্রস্থ হয়ে, উনি একটি সিঁড়ি বের করলেন। এবার ঐ পথেই হাঁটবেন।

৩য় পর্ব: প্রিয় দর্শিনীর গোপন অভিসার।
এবার চিত্রনাট্য বাস্তবে রূপ দিতে-অভিষেক ঘটল গোপন অভিসারের। দৃশ্যপটে আবির্ভাব হলো এক যুবকের। প্রিদর্শিনীর মতো সেই যুবকও একই পথে হাটতে চায়। ভিষণ উদ্যোগে খুজছে কাঙ্খিত লক্ষে পৌঁছার সিঁড়ি। যদিও সেও না-কি বিবাহিতা। যদিও কখনও প্রিয়দর্শিনীর সাথে ঐ যুবকের মানসিক মিলন ঘটে, তবে সেটা হবে-পরকীয়া প্রেম- প্রেমের সংজ্ঞা তা-ই বলে।

৪র্থ পর্ব: প্রিয়দর্শিনীর এ-কি দশা!
বাঙলা ব্যাকারণের ভাষায় যা-কে দেখলেই ভাললাগে ও ভালবাসতে ইচ্ছে করে-তাকেই প্রিয়দর্শিনী বলে ডাকা হয়। আর অপেক্ষামান যুবক এমন একজন প্রিয় দর্শিনীর খোঁজেই ছিলেন।
একদা বৈশাখী ঝড়ের রাতে, প্রিয়দর্শিনীর ইংরেজী ‘মুভি’ দেখার সাধ জাগল। গলায় কিছুটা হুইস্কি, বিয়ার ঢেলে প্রিয়দর্শিনী চট্টগ্রামের ‘আলমাস’ সিনেমা হলের দিকে গাড়ী ছুটালো। আর স্টিয়ারিংএ হাতে রেখে- অবচেতন মনে, স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে ভীষন দ্রুত গতিতে গাড়ীটি এগোতে লাগল। কেবিনে বসে সিনেমা দেখতে লাগল। হাটাৎ প্রিয়দর্শিনীর ইচ্ছে হলো, ধুমপানের। যদিও দামী ব্রান্ডের মেলবোর সিগারেটের প্যাকেট পার্সে ছিল। কিন্তু লাইটার ছিল না। তখন পাশে বসা যুবকের কাছে লাইটার চাইলেন। কথিত যুবক লাইটারটি জ¦ালিয়ে দিলেন। তথাপি প্রিয়দর্শিনী একটি স্বস্তির নি:শ্বাস নিলেন।

৫ম পর্ব: ঝড়ের রাত্রিতে- ঝড় তুলেছিল ।

তথাকথিত ও আকাঙ্খিত যুবকেরও শীতকালের ঝড়-বৃষ্টিটা একদম ভাল লাগছিল না। তাই সেও গেল আলমাস সিনেমা হলে ইংরেজী মুভি উপভোগ করতে। তথাপি প্রচন্ড শীত ও বৃষ্টিতে, শরীরটাকে গরম রাখার জন্য রাশিয়ান কোটের বাম পকেটে একটা ভদকার বোতল নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এবারতো ট্রাজেডি মোড় নিল অন্য দিকে। স্বল্প ক্ষণের পরিচয়ে যুবকের মনে সারা দিল- ‘চোখ যে বলে মনের কথা’ গানটি। অত:পর লাইটারের মতো ভদকার বোতলের চিপিটা খুলেই মিস M এর দিকে এগিয়ে গেল। অত:পর উভই তৃপ্তি মতো ভদকা পান করলো। পরে খুশ মেজাজে হাসা-হাসি ও ফিস ফিস করতে লাগল। এটা যেন- শওকত ওসমানের ‘ক্রীতদাসের হাসি’র কথা মনে করিয়ে দিল। তবে ভদকার নেশায় টাল-মাতাল হয়ে মিস M শরম-লজ্জা হারিয়ে- চার দেয়ালের অন্ধকারের মধ্যে স্বল্প পরিচিত যুবকটিকে জড়িয়ে ধরল। আর অনবরত লিপকিস করতে লাগল। আকাঙ্খিত যুবকতো- সারা দিবেই। অবস্থার দৃষ্টে, ব্যাপারটা এমন ধারালো যে- সেই ঝড়ের রাত্রিতে- মিস M চুম্বনের ঝড় তুলেছিল।

৬ষ্ঠ পর্ব : প্রিয়দর্শিনীর ‘লজিং জামাই’

তথাপি পরবর্তী ঘটনাগুলো আরো আবেগিয় ও আরোও অনুভূতি সম্পন্ন ফ্যাক্ট।

যেহেতু প্রিয়দর্শিনীর জামাই অন্য জেলায় চাকুরী করে আর সন্তান গ্রীষ্মের ছুটিতে মামার বাড়িতে বেড়াতে গেছে। তাই কাঙ্খিত যুবককে প্রিয়দর্শিনী নিজের আলিশান বাসায় নিয়ে গেলেন এবং “লজিং জামাই” হিসাবে আদর-যত্ন করতে লাগলেন। (চলবে…….)

শাফায়েত জামিল রাজীব
সম্পাদক,
একুশে টাইমস্ নিউজ মিডিয়া।

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana