বৃহস্পতিবার, ১৯ Jun ২০২৫, ১২:২৬ পূর্বাহ্ন

এক দুর্ধর্ষ গেরিলা যোদ্ধা

এক দুর্ধর্ষ গেরিলা যোদ্ধা

কিশোরগঞ্জ শহরের খরমপট্টি নিবাসী এক দুর্ধর্ষ মুক্তিযোদ্ধার নাম এ.টি.এম হায়দার, বীরউত্তম। ক্যাপ্টেন হায়দার ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন দক্ষ বোমা বিশেষজ্ঞ ও গেরিলা যোদ্ধা। একাত্তরে উনি কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে কর্মরত ছিলেন। পাকবাহিনী কর্তৃক ২৫শে মার্চের (পরবর্তীকালে লে: কর্ণেল) গণহত্যার পর ক্যাপ্টেন হায়দার ২নং সেক্টর কমান্ডার মেজর খালেদ মোশারফের সাথে সম্পৃক্ত হন এবং সাব সেক্টর কমান্ডার হিসাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ক্যাপ্টেন হায়দার ১৪ই এপ্রিল ছয়জন ভারতীয় কমান্ডো দ্বারা পরিবেষ্টিত অবস্থায়; কয়লাচালিত দুই বগির একটি ট্রেন নিয়ে নিজ জন্মভূমি কিশোরগঞ্জ শহরে আসেন। অতঃপর খরমপট্টির নিজ বাসভবন থেকে একটি জীপযোগে পাকবাহিনীর গতিরোধ করার জন্য ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের তারাঘাট বাজারের ব্রীজ ও মুসুল্লীর রেলব্রীজ ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেয়।

ক্যাপ্টেন হায়দার ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের অন্তর্গত মেলাঘর’ নামক স্থানে- “ক্র্যাক প্লাটুন” নামে গেরিলা দলটিকে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন। অতঃপর যুদ্ধের শেষের দিকে সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশারফ কপালে বুলেট বিদ্ধ হয়ে আহত হলে; উনি ২নং সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। রক্তস্নাত ১৬ই ডিসেম্বরের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে ক্যাপ্টেন হায়দার ছিলো দ্বিতীয় বাঙালী সামরিক অফিসার। যিনি অতিদ্রুত তাঁরবাহিনী নিয়ে ডেমরা-মুগদা হয়ে; প্রথম ঢাকায় প্রবেশ করেছিলেন। শুধু তাই নয়, ক্যাপ্টেন হায়দার তখন বেতারে ২ নং সেক্টরের অধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন- দেশ শত্রুমুক্ত হয়েছে। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস- এই মহান যোদ্ধা ৭ই নভেম্বর `৭৫ সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ কোন্দলে নিহত হন।

শাফায়েত জামিল রাজীব।

সম্পাদক, একুশে টাইমস্।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana