মহান আল্লাহ মানব জাতিকে শরীর ও অন্তর-দুয়ের সমন্বয় ঘটিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। আমাদের যাপিত জীবনে নানা সময় শয়তানের ধোঁকায়, নফসের প্ররোচনায়, পরিবেশের তাড়নায়, সগিরা-কবিরা গুনাহসহ নানাবিধ গুনাহে জড়িয়ে পড়ি।
এসব গুনাহের মধ্যে চারটি গুনাহ এমন আছে, যা মানুষের অন্তরাত্মা ধ্বংস করার ক্ষেত্রে বিষতুল্য। বিষক্রিয়া যেমন বিষপানকারীকে মৃত্যুর কোলে ঠেলে দেয়, তেমনিভাবে গুনাহকারী ব্যক্তি কৃত গুনাহের ক্রিয়ায় ধ্বংসের মুখে নিপতিত হয়। এখানে সেই চারটি গুনাহ সম্পর্কে আলোচনা তুলে ধরা হলো-
অনর্থক কথা বলা : মহান আল্লাহর অপূর্ব সৃষ্টি মানুষের এক ক্ষুদ্রাকায় অঙ্গ হলো জিহ্বা। জিহ্বা আকারে ছোট হলেও এর প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া অনেক বড়। এই জিহ্বার মাধ্যমে মানুষ তার মনের ভাব, অভিব্যক্তি ও কামনা-বাসনা আদান-প্রদান করে থাকে। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘তিনি মানুষকে ভাব প্রকাশ করতে শিখিয়েছেন’ (সুরা আর-রহমান : ৪)। ভাব প্রকাশের এই মাধ্যমটিকে সত্য-সঠিক ও কল্যাণকর ক্ষেত্রে ব্যবহার করাই যুক্তিযুক্ত। এ ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্য-সঠিক কথা বলো’ (সুরা আহজাব : ৭০)। এর বিপরীতে অনর্থক ও অপ্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে জিহ্বা ব্যবহার করা মারাত্মকতম গুনাহ। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যেকোনো ব্যক্তির ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য হলো অনর্থক কথা ত্যাগ করা’ (তিরমিজি : ২৩১৭)। আরেকটা হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর জিকির ছাড়া বেশি কথা বলো না, কারণ আল্লাহর জিকির ছাড়া বেশি কথা বলার দ্বারা অন্তর কঠিন হয়ে যায়। কঠিন অন্তরের অধিকারী ব্যক্তিটি আল্লাহর রহমত থেকে সর্বাধিক দূরে সরে যায়’ (তিরমিজি : ২৪১১)। বোঝা গেল, জিকির ও দ্বীনের কথা সারা দিন বললেও কোনো সমস্যা নেই বরং এর দ্বারা মানুষের আমলনামায় সওয়াব লেখা হয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালা ও কেয়ামত দিবসের ওপর ঈমান এনেছে, সে যেন ভালো কথা বলে, না হয় নীরব থাকে।’ (বুখারি : ৬০১৯)