শুক্রবার, ২০ Jun ২০২৫, ০৭:২৯ অপরাহ্ন

আগস্ট মানবসভ্যতার ইতিহাসে ঘৃণ্য ও নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের মাস

আগস্ট মানবসভ্যতার ইতিহাসে ঘৃণ্য ও নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের মাস

 মোঃ মাইন উদ্দিন : আগস্ট মাস মানেই জাতির বেদনা বিধুর শোকের মাস। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এ মাসের ১৫ তারিখে সপরিবারে হত্যা করে ঘাতকচক্র। আগস্ট মানবসভ্যতার ইতিহাসে ঘৃণ্য ও নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের কালিমালিপ্ত বেদনাবিধুর শোকের মাস। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নরপিশাচরূপী খুনিরা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার পর্যন্ত বন্ধ করতে ঘৃণ্য আইন ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিল। ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম, ঘৃণিত এ হত্যাকাণ্ডে বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসের, জাতির জনকের জ্যেষ্ঠ পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, দ্বিতীয় পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল, কনিষ্ঠ পুত্র শিশু শেখ রাসেল, নবপরিণীতা পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শেখ ফজলুল হক মণি এবং তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মণি, স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক ও জাতির জনকের ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছোট মেয়ে বেবী সেরনিয়াবাত, কনিষ্ঠ পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত আবদুল্লাহ বাবু, ভাইয়ের ছেলে শহীদ সেরনিয়াবাত, আবদুল নঈম খান রিন্টু, বঙ্গবন্ধুর প্রধান নিরাপত্তা অফিসার কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদ ও কর্তব্যরত অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিহত হন। এই আগস্টে-ই জাতির জনকের কন্যা, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড ছুঁড়ে হত্যার চেষ্টা হয়েছিল। ভাগ্যক্রমে সেদিন তিনি বেঁচে গেলেও এ ঘটনায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি আলহাজ্ব জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী, বর্তমান কিশোরগঞ্জ-৬ ভৈরব-কুলিয়ারচর আসনের সংসদ সদস্য ও বিসিবির সভাপতি আলহাজ্ব নাজমুল হাসান-এর মাতা আওয়ামী লীগের সে সময়ের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত ও ৫ শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর নোবেলজয়ী পশ্চিম জার্মানির নেতা উইলি ব্রানডিট বলেছিলেন, ‘মুজিবকে হত্যার পর বাঙালিদের আর বিশ্বাস করা যায় না। যে বাঙালি শেখ মুজিবকে হত্যা করতে পারে তারা যেকোনো জঘন্য কাজ করতে পারে।’ আগস্ট মাস বড়ই বেদনা বিধুর। বাঙ্গালীর ইতিহাসে ঘাতকেরা বারবার এই আগস্ট মাসকেই বেছে নিয়েছেন দেশপ্রেমিকদের হত্যা করার জন্য। শুধু বঙ্গবন্ধু এবং তার পারিবারের সকলকেই হত্যা নয়, ১৯০৮ সালের ১১ আগস্ট ব্রিটিশ ঘাতকেরা ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছিলো কিশোর বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুকে। “একবার বিদায় দে মা, ঘুরে আসি…..” ক্ষুদিরাম বসু ইংরেজদের হাত থেকে উপমহাদেশ রক্ষাসহ কৃষি ও কৃষকদের অধিকার আদায়ে আত্নবলিদান দিয়ে গেছেন। ফাঁসি হওয়ার সময় ক্ষুদিরাম বসুর বয়স ছিল ১৮ বছর ৭ মাস ১১ দিন। ক্ষুদিরাম কনিষ্ঠতম বিপ্লবী হিসেবে সম্মানিত। তিনি ফাঁসির মঞ্চে বীরের ন্যায় হেটে উঠে যায়। এছাড়াও এ আগস্টে স্বাধীন বাংলাদেশে একযোগে, একই সময়ে ৬৫ জেলায় বোমা মারা হয়েছিল জাতিকে মেধা শূন্য এবং দেশের বিচার ব্যবস্থা ধ্বংস করার জন্য। আজ বেদনা বিধুর ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। আজকের এই দিনে আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সকল সদস্যসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের সকল শহীদ ও ১৯০৮ সালের ১১ আগস্টে ক্ষুদিরাম বসুসহ সকল শহীদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana