সোমবার, ২৩ Jun ২০২৫, ১২:১০ পূর্বাহ্ন
মো. ইমরান হোসেন, বার্তাপ্রধান
প্রবল বৃষ্টিতে কিশোরগঞ্জের ১৩টি উপজেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার পরিবার। তলিয়ে গেছে অনেক ফসলি জমি ও মাছের ঘের। নষ্ট হয়েছে অনেক ফসল। হাস-মুরগীর অনেক খামারে পানি উঠেছে। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাড়িয়েছে কয়েক কোটি টাকারও বেশী। এতে বিপাকে পড়েছে নি¤œ আয়ের মানুষ।
সরেজমিনে জানাযায়, জেলার কিশোরগঞ্জ সদর, ইটনা, মিঠামইন, নিকলী, করিমগঞ্জ, কটিয়াদী, হোসেনপুর, তাড়াইলসহ হাওর অঞ্চলগুলোতে ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। কেউ কেউ ঘরের চারদিকে ইট বসিয়ে পানি ফেরানোর চেষ্টা করছে। অনেক শাক-সবজির ক্ষেতে ২থেকে ৩ফুট পানি জলাবদ্ধ হয়ে আছে। বেশিরভাগ আন্ডারগাউন্ডে যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রযেছে সেগুলো তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় ৫ থেকে ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানাগেছে।
কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের নগুয়া বটতলা, নগুয়া প্রথম মোড় ও শেষ মোড় সিএনজি স্ট্যান্ড, আলোমেলার মেইন সড়কের উপর ৩ফুট পানি প্লাবিত হয়েছে। রাস্তার দুই পাশে অনেক ঘরবাড়িতে পানি জমে আছে। এতে গবাদি পশু সহ হাস-মুরগীর খামারীরা বিপাকে পড়েছেন।
কিশোরগঞ্জ জেলা সদরের মো: রহিম মিয়া, মো: কালাম মিয়া, মো: জয়নাল হোসেন তারা বলেন, ‘আমাদের বাড়ি ঘরে হাটু উবদি পানি উঠেছে। গরু-বাছুর নিয়ে অনেক কষ্টে রাত্র কাটাইছি। কাজে কামে যাইতে পারি না। মাইয়া পোলা লইয়া কি খাইয়াম কিছুই ভাবতে পারছিনা।’
জেলার অনেক ফিসারির মালিকরা বলেন, আমাদের প্রত্যেকের প্রায় ৫ থেকে ১০ লাখ টাকার মাছ ক্ষতিসাধন হয়েছে। অতিবৃষ্টিতে পুকুরের অধিকাংশ মাছ বেড়িয়ে গেছে। ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে মাছের চাষ করেছি। এখন আমরা কি করব ভেবে পাচ্ছিনা।
করিমগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা মো: শওকত জানান, আমার এলাকাতে প্রায় ১৫০ একর ধানের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। আর বৃষ্টি না হলে; পানি নেমে গেলে হয়তো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম হবে। পানি জমিতে জমে থাকলে সব ধান গাছ নষ্ট হয়ে যাবে। এতে আমিসহ আমাদের এলাকার সব কৃষকই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আব্দুস সাত্তার জানান, ফসলি জমিতে পানি যদি ২ থেকে ৩ দিন জমা থাকে তাহলে রোপা আমন ধান ও সবজি জমির ক্ষয়ক্ষতি হবে। আর যদি পানি নেমে যায় তাহলে ক্ষয়ক্ষতি কম হবে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা করে উপজেলা কমিটির মাধ্যমে চাষিদের আর্থিক সাহায্য করা হবে।
এ বিষয় কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম জানান, ইতিমধ্যে আমরা জলাবদ্ধ এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে যাচাই বাচাই করে আর্থিক সাহায্যের আওতায় আনা হবে।