শুক্রবার, ২০ Jun ২০২৫, ১২:০৯ অপরাহ্ন

বন্যায় পানিদূষণ ও প্রয়োজনীয় সচেতনতা

বন্যায় পানিদূষণ ও প্রয়োজনীয় সচেতনতা

বন্যা বাংলাদেশের মানুষের কাছে নতুন কোনো বিষয় নয়। নানা ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির মতো এই ঘাতক বন্যা দেশের মানুষের কাছে চিরায়ত সংস্কৃতির এক অভিন্ন অংশে পরিণত হয়েছে।
এ ভূখ- ব্রিটিশদের দখলের পর ১৭৬৭ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে বন্যার তথ্য পাওয়া যায়।  এই অঞ্চলে বন্যা নিয়ে মহাভারত, রামায়ণ ও অন্যান্য প্রাচীন গ্রন্থে লেখা রয়েছে। ৩২১-২৯৬ খ্রিস্টপূর্বে চন্দ্রগুপ্তের আমলে এবং ৫০৭-৫৮৭ খ্রিস্টপূর্বে জ্যোতির্বিদ আর্যভট্টের লেখায় এ এলাকার বন্যার আভাস রয়েছে। এ বঙ্গে ১৮৭০-১৯২২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত অধ্যাপক পিসি মহলানবীশ প্রকাশ করেন যে, এখানে প্রতি দুবছর পরপর মাঝারি এবং ৬-৭ বছর অন্তর বড় ধরনের বন্যার দেখা দিত। এমনকি এ সময় বন্যার কারণে ব্রহ্মপুত্র নদের পুরোনো গতিপথের পরিবর্তন ঘটে। এ দেশে বন্যার দাপটের শুরু মূলত ১৯৫৪ সাল থেকে। ১৯৫৪-৯৮ সাল পর্যন্ত তিন যুগে প্রায় ৩২ বার বড় আকারের বন্যা দেখা দেয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঠিক আগে ১৯৭০ সালে

রয়েছে প্রলয়ংকরী বন্যার দুঃসহ স্মৃতি। ওই বছরের বন্যায় প্রাণহানি ঘটে ৫ লাখ মানুষের। খাদ্যশস্য নষ্ট হয় প্রায় ১৩ লাখ টন। স্বাধীনতার পর ১৯৭২, ১৯৭৩, ১৯৭৪, ১৯৮৭, ১৯৮৮, ১৯৯৮, ২০০৮ ও ২০১৭ সালে দেশজুড়ে বন্যার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এসব বন্যায় দেশের ২০-৬০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হতে দেখা যায়। বন্যায় ঘরবাড়ি, গবাদিপশু, কৃষিপণ্য, মৎস্য খামার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সব সামাজিক সরবরাহ, সেতু-কালভার্টসহ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় হাজার হাজার কোটি টাকা।
ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে প্রতি বছরের বন্যার ক্ষতিকর প্রভাব যতটুকু পারা যায় ততটুকু কমানোর চেষ্টা করা উচিত। বাংলাদেশ নদীবিধৌত সমতল ব-দ্বীপ অঞ্চল। দেশের প্রায় ২৫০টি নদী জালের মতো জড়িয়ে রেখেছে প্রিয় বাংলাদেশকে। ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশ প্রায়ই বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়ে থাকে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, দারিদ্র্য ও অভাবের মতো বন্যাও যেন এ দেশের মানুষের কাছে নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতি বছরই বন্যার কবলে পড়ে বাংলাদেশ। বন্যার পানি ওঠার পর এবং পানি নেমে যাওয়ার পর পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana