শুক্রবার, ২০ Jun ২০২৫, ০৫:৫৬ অপরাহ্ন

পবিত্র ঈদুল আজহা

পবিত্র ঈদুল আজহা

মুসলিম জাহানের জন্য খুশির বার্তা নিয়ে বছর ঘুরে ফিরে এসেছে ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আজহা। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের প্রতি প্রিয় বান্দা হজরত ইবরাহিম (আ.) ও তাঁর পুত্র হজরত ইসমাইলের (আ.) সীমাহীন ভক্তি, সর্বোচ্চ ত্যাগের সদিচ্ছা এবং গভীরতম আত্মসমর্পণে পরম করুণাময় সন্তুষ্ট হন এবং তিনি হজরত ইবরাহিমকে (আ.) আত্মত্যাগ ও ভালোবাসার নিদর্শনস্বরূপ পশু কুরবানি করার নির্দেশ দেন।

কুরবানির মূল কথা হলো ত্যাগ। সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কুরবানি দিয়ে দরিদ্র প্রতিবেশীদের মধ্যে এর মাংস বিতরণ করা প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব। পরিতাপের বিষয়, এদেশের অনেকের কাছে ধর্মের মতো আধ্যাত্মিক বিষয়ও পরিণত হয়েছে লোকদেখানো আচারে। প্রতিযোগিতা করে মাংস খাওয়া এবং মাসের পর মাস জমিয়ে রাখা আমাদের কালচারে পরিণত হয়েছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে-আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে কুরবানি করা পশুর রক্ত বা মাংস কিছুই পৌঁছায় না, শুধু পৌঁছায় বান্দার তাকওয়া। কাজেই কুরবানি কোনো লোকদেখানো বা প্রতিযোগিতার বিষয় নয়। কুরবানির অর্থ ত্যাগ বা উৎসর্গ। আল্লাহতায়ালা প্রিয় বস্তুকে উৎসর্গ করতে বলেছেন। আমরা তাঁর আদেশ পালন করব অন্তরের তাগিদে, মানুষকে দেখানোর জন্য নয়। কুরবানির মাধ্যমে আমরা ভেতরের পশুশক্তিকে যেমন হত্যা করব, তেমনি সুদৃঢ় করব মানুষে মানুষে ভালোবাসা। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অভুক্ত শীর্ণ মানুষের জন্য একবেলা বা দুবেলা উন্নতমানের আহারের ব্যবস্থা করা যায়। বিশেষ করে বর্তমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে যারা বেশি কষ্টে আছে, তাদের প্রতিও বাড়িয়ে দেওয়া যায় সহানুভূতির হাত। কিছু পশু চাষাবাদের পশু হিসাবে বিপন্ন কৃষকদের মাঝে দান করা যায়। সব ধর্মেই দানকে মহিমান্বিত করা হয়েছে। মানবতার সেবাই তো প্রকৃত ধর্ম। পশু কুরবানির মধ্য দিয়ে ব্যক্তি, সমাজ তথা মানুষের ভেতরের পশুশক্তিকে দমনই হচ্ছে কুরবানির মূল কথা। ঈমানদার মুসলমানরা তা-ই করেন। এ ত্যাগ ও আত্মোৎসর্গের পথ ধরে লাভ করা যায় আল্লাহর নৈকট্য।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana