বৃহস্পতিবার, ১৯ Jun ২০২৫, ০৩:৫১ পূর্বাহ্ন

কুলিয়ারচরে আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে ছোট ভাইকে পালায় বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ

কুলিয়ারচরে আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে ছোট ভাইকে পালায় বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ

মোঃ মাইন উদ্দিন, কুলিয়ারচর প্রতিনিধি : কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ মহসিন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে ছোট ভাই মোঃ সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়াকে ডেকে নিয়ে গোয়াল ঘরের পালার সাথে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। তবে আওয়ামী লীগ নেতা মহিন বলছেন ভিন্ন কথা। রোববার (১১ জুন) সকাল ৭ টার দিকে উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের নলবাইদ মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত হাজী আবদুল সাত্তারের বাড়িতে এমন ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামী লীগ নেতা মহসিন ও সাইফুল তারা দু’জন মৃত হাজী আবদুল সাত্তারের পুত্র। আওয়ামী লীগ নেতা মহসিন হলেন, ফরিদপুর ইউনিয়নের নলবাইদ ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক। জানা যায়, ফরিদপুর ইউনিয়নের ৯ ওয়ার্ডে নতুন ওয়ার্ড কমিটি গঠন করার লক্ষ্যে শনিবার ১০ জুন বিকেলে স্থানীয় আনন্দ বাজারে একটি আলোচনা সভার আহবান করেন ফরিদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটি। সভায় ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি পদপ্রার্থী হলেন সাইফুলের বড় ভাই মহসিন। সেই হিসেবে শনিবার সকালে মহসিন তার ছোট সাইফুলকে আনন্দ বাজারের আলোচনা সভায় যাওয়ার জন্য যাওয়ার জন্য বলেন। পরে সাইফুল তার বড় ভাইয়ের সাথে না গিয়ে যায় অপর এক সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মোঃ এমাদ মিয়ার সাথে। আর এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পরদিন রোববার সকাল ৭ টার দিকে ছোট ভাই সাইফুলকে ডেকে তার বাড়িতে নিয়ে তার পক্ষে না গিয়ে অন্যের পক্ষে কেন গেল এ ব্যাপারে জিগ্যাস করে। এ সময় সাইফুলও ক্ষুব্ধ হয়ে দা হাতে নিয়ে মহসিনের দিকে যায়। এতে মহসিন ছোট ভাই সাইফুলকে মারপিট করে গেয়াল ঘরের পালার সাথে কিছুক্ষণ বেঁধে রাখে। এ ব্যাপারে সাইফুল বলেন, মহসিন ভাই আমাকে আনন্দ বাজার আওয়ামী লীগের মিটিং এ যেতে বলেছিলেন আমি তার সাথে না গিয়ে সাধারণ পদপ্রার্থী এমাদের সাথে কেন গেলাম এর জন্য সে আমাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গোয়াল ঘরের পালার সাথে রশি দিয়ে বেঁধে সে এবং তার স্ত্রী দুলেনা আক্তার, তিন পুত্র মোঃ মিথুন ভূঁইয়া, মোঃ তানবীর ভূঁইয়া ও মোঃ তাজিম ভূঁইয়া আমাকে মারপিট করে।এ সময় আমার ডাক-চিৎকারে প্রতিবেশি মোঃ মিষ্টার মিয়া, জামান মিয়া ও আমার স্ত্রীসহ অনেকে এসে বাঁধন খুলে তাদের হাত থেকে আমাকে উদ্ধার করে। এ সময় আমার স্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবু তালেব এর কন্যা নাসরিন জাহানকেও তারা মারপিট করে। সাইফুল আরো বলেন, আমি তার বিমাতা ভাই বলে সে আগেও আমাকে মারপিট করে উল্টো আমার নামে মামলা করে আমাকে হয়রানি করছে। সাইফুলের মেয়ে ১০ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্রী সাউদা ইসলাম তায়েবা বলেন, আমার কাকা মহসিন, আমার বাবাকে ক’দিন পরপরই মারপিট করে। তাদের এমন আচার-আচরণে আমি সব সময় আতংকে থাকি এবং আমার পড়াশোনার বিঘ্ন ঘটে। সাইফুলের স্ত্রী- মুক্তিযোদ্ধা সন্তান নাসরিন জাহান প্রধানমন্ত্রীসহ ও দেশের সকল বীর মুক্তিযোদ্ধার নিকট এই ঘটনার বিচার দাবি করেন। আওয়ামী লীগ নেতা- বড় ভাই মহসিন তার ছোট ভাই সাইফুলকে রশি দিয়ে বাঁধার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি আসলে রাগেবশে সাইফুলকে কয়েকটা কিল-ঘুষি দিয়েছি। এর কারণ হলো, আমি নলবাইদ ১নং আওয়ামী লীগের সভাপতি পদপ্রার্থী। শনিবার ১০ জুন সকালে ওকে আমার সাথে আনন্দ বাজাররস্থ ফরিদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি বিষয়ে একটি আলোচনা সভাতে আমার সাথে যাওয়ার জন্য বলছিলাম। কিন্তু সে আমার না গিয়ে, অন্য একজন সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থীর পক্ষে গিয়েছে। যার ফলে আমি লজ্জা-শরমে ওরে একটু শাসন করেছি। আর আমার এ শাসনকে কেন্দ্র করে এলাকার একটি মহল আমার ছোট ভাইকে উস্কানি দিয়ে বেড়াচ্ছে। আমি বর্তমানেও ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তবে এ ঘটনার জন্য তিনি নিজেই অনুতপ্ত বলে আমাদের এই প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana