শুক্রবার, ২০ Jun ২০২৫, ০১:৫৮ পূর্বাহ্ন
মোঃ মাইন উদ্দিন, কুলিয়ারচর প্রতিনিধি :
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার উছমানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন আহম্মেদ এর বাড়িতে তার স্ত্রী ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা অজুফা আক্তার ও তার দুই শিশু সন্তানের উপর যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন ইমন ও তার দলবল কর্তৃক হামলা, শ্লীলতাহানি, বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনার প্রতিবাদে ও বিচার দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টার দিকে উপজেলার ভরাডুল গ্রামের রাস্তায় উছমানপুর ইউনিয়নবাসী ও ভরাডুল গ্রামবাসীর উদ্যোগে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে হামলাকারী যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন ইমন সহ তাদের সহযোগীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করে বক্তব্য রাখেন, ভরাডুল গ্রামের হামলার শিকার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের মহিলা নেত্রী অজুফা আক্তার, তার ছেলে বিজয়, রাজু ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন আহম্মেদ, মান্নান, কালা মিয়া, ইউপি সদস্য নুরুজ্জামান, ইসরাফিল ও তামান্না আক্তার প্রমূখ। এতে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ গ্রহণ করেন। বক্তারা বলেন, রহস্যজনক কারনে ঘটনার ৪ দিনেও থানা পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতার ও অভিযোগ এফ.আই.আর না করায় তারা আতংকে দিনাতিপাত করছে। এ সময় তারা হামলালারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। জানা যায়, ফারজানা আক্তার নামে এক নারীর হুকুমে কুলিয়ারচর উপজেলা যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন ইমন (৪০) কর্তৃক মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রীকে প্রকাশ্যে ফিল্মি স্টাইলে মারপিট ও শ্লীলতাহানি করে। এ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর থেকে এলাকায় এ নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠতে থাকে। আহত মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী অজুফা আক্তার (৩৮) সাংবাদিকদের বলেন, গত ২৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুরের দিকে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফারজানা আক্তার নামের এক নারীর হুকুমে ভরাডুল গ্রামের পরকীয়া প্রেমিকা লিপি আক্তারকে খুশি করতে উপজেলার বড়খারচর গ্রামের যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন ইমন দেশীয় অস্ত্রাদীসহ দলবল নিয়ে অজুফা আক্তারের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করে। হামলায় আওয়ামী লীগ নেত্রী অজুফা আক্তার সহ ৩ জন আহত হয়। যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন ইমন প্রকাশ্যে ফিল্মি স্টাইলে অজুফা আক্তারকে নির্মম ভাবে মারধোরসহ শ্লীলতাহানি করে। এ সময় ৯৯৯-এ কল করলে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয় এবং হামলাকারীদের হাত থেকে প্রানে রক্ষা পায় ওই নেত্রীসহ তার দুই সন্তান। পরে কুলিয়ারচর থানা পুলিশের সহায়তায় এলাকাবাসী আহত অবস্থায় অজুফা আক্তারকে উদ্ধার করে কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে। আহত দুই শিশু সন্তান বিজয় (১৫) ও রাজু (১৩) কে কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করান। এ ঘটনায় গত ২৮ ডিসেম্বর বুধবার বিকালে আহত অজুফা আক্তার বাদী হয়ে যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন ইমনকে প্রধান আসামী করে হুকুমদাতা সহ ৩০/৩৫ জনকে আসামী করে কুলিয়ারচর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগ করার ৪দিনেও মামলাটি রুজু হয়নি বলে দাবী করেন অজুফা আক্তার। বর্তমানে হামলাকারীরা বাদীর পরিবারকে বিভিন্ন প্রকার হুমকী ধামকী দিয়ে আসছে জানায় তারা। এ ছাড়াও বিভিন্ন ফেসবুক আইডি থেকে শ্লীলতাহানীর ভিডিও প্রচার করায় এবং সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে হামলাকারীরা। হুমকির ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিক আলি হায়দার শাহিন বাদী হয়ে গত ৩০ ডিসেম্বর শুক্রবার সাংবাদিক মোছাঃ নিলুফা আক্তারকে দিয়ে সাধারণ ডায়েরি ভূক্তির জন্য কুলিয়ারচর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত সাংবাদিক আলি হায়দার শাহিন এর আবেদনটি সাধারণ ডায়েরি ভূক্তি হয়নি বলে জানা যায়। ন্যাক্কারজনক এ ঘটনায় উছমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কুলিয়ারচর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ নিজাম ক্বারী, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দা নাছিমা আক্তার চায়না ও উছমানপুর ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উছমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য নাজমা সুলতানা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করে বলেন, এটা একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। এক গ্রামের মানুষ অন্য গ্রামে গিয়ে এ ভাবে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও নারী সহ শিশুদের মারধোর করতে পারেনা। স্থানীয় সংবাদিকদের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, বিষয়টি তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।