মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন
[দেশের মানুষকে তিনি ভালোবেসেছিলেন এবং বড় বেশি ভালোবেসেছিলেন। দেশের মানুষও তাঁকে ভালোবেসেছিল-আজও ভালোবাসে।]
একটি রাষ্ট্র যিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তিনি যে এমনভাবে ঘাতকের অস্ত্রাঘাতে নিহত হবেন, কেউ কি কখনো তা ভেবেছিল? প্রবল আত্মবিশ^াস আর দেশবাসীর প্রতি আস্থা হয়েছিল তাঁর কাল। কিন্তু সেই আত্মবিশ^াস, সেই আস্থা, সেই ভালোবাসাই কি তাঁর গুন ছিল না? তাঁর মর্মান্তিক মৃত্যুকে অতিক্রম করে তাঁর গৌরবোজ্জল জীবনের দিকে আজ যখন তাকাই, তখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিগত গুন ও বৈশিষ্ঠ এবং তাঁর রাজনৈতিক লক্ষ্য ও কর্মপন্থা আমাদের অভিভূত করে। বঙ্গবন্ধুর প্রথম যে গুন আমরা লক্ষ করি, তা তাঁর অদম্য সাহস। এর অনেক দিন পরে, পাকিস্তান সরকার যখন পূর্ব বাংলায় নির্বাচিত মন্ত্রিসভা ভেঙ্গে দিয়ে কেন্দ্রের শাসন জারি করে, তখন সদ্য মন্ত্রিত্ব হারানো শেখ মুজিবুরের বাসভবনে পুলিশ হানা দেয় এবং তাঁকে না পেয়ে চলে যায়। ঘরে ফিরে এসে তিনি সে খবর পান। তৎক্ষণাৎ ঢাকার জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটকে ফোন করেন তিনি। ‘আপনার ফোর্স আমার বাসায় এসেছিল, বোদ হয় আমাকে অ্যারেষ্ট করতে। তাদের পাঠিয়ে দেন, আমি এখন বাসায়’ আত্মগোপনকারী বাম রাজনীতিবিদদের প্রতি শ্রদ্ধা থাকা সত্ত্বেও তিনি আত্মগোপনের রাজনীতি নিজের বলে মনে করেননি। তাই আশ্চর্য নয় যে, মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়েও ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে তিনি রয়ে যান ধানমন্ডির বাড়িতে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সুযোগ দেন তাঁকে গ্রেপ্তার করতে।
এই অসীম সাহসের আরেক পরিচয়স্থল তাঁর ৭ মার্চের ভাষণ। সর্বশক্তি দিয়ে আক্রমণ করতে প্রস্তুত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মরণাস্ত্রের মুখে দাঁড়িয়ে ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম’ বলতে অসামান্য সাহসের প্রয়োজন হয়। সে সাহস তাঁর ছিল। অবশ্য সেই সাহসের অনেকটাই তিনি সংগ্রহ করেছিলেন অসহযোগ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী মানুষের তেজোদীপ্ত ও স্বত:স্ফুর্ত প্রতিবাদ থেকে।
১৯৭৩ সালে আলজেরিয়ায় অনুষ্ঠিত জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর সাথে কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রোর এর এক বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে ফিদেল কাস্ত্রো সাংবাদিকদেরকে বলেছিলেন আমি হিমালয় দেখিনি, বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি।
-সম্পাদক
একশে টাইমস্