মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:৩২ পূর্বাহ্ন
সুদীর্ঘ দশ বছর পর সামরিকজান্তা আইয়ুব শাহীর বিরুদ্ধে ক্ষেপে উঠল এদেশের ছাত্র জনতা। এর পেছনে মুখ্য কারন ছিল পশ্চিমাদের শাসন ও শোষণের অবসান এবং বন্দিদশা থেকে শেখ মুজিবের মুক্তিলাভ। আর আন্দোলনের নিয়ন্ত্রক ছিল ‘সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’ এবং তাদের প্রণীত ১১ দফা দাবি। ইতিমধ্যে আইয়ুব খান পূর্বথেকেই আন্দোলনকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ১৪৪ ধারা জারী করে রাখেন। কিন্তু ২০ শে জানুয়ারি ’৬৯ সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ১৪৪ ধারাকে উপেক্ষা করে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে মিছিল করে নিমতলীতে পৌঁছালে পুলিশ ও ই.পি.আর. মিছিলে গুলি চালায়। তখন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের মাস্টার্স শ্রেণির ছাত্র এবং ছাত্র ইউনিয়নের নেতা আসাদসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়। তাদের রক্তাক্ত দেহ মেডিক্যাল কলেজে নেওয়া হলে ছাত্রনেতা আসাদকে মৃত ঘোষণা করা হয়। আসাদের মৃত্যু মানেই ‘বারুদে আগুন পরা’ অবস্থায় রূপ নিল। পরেরদিন আসাদের রক্ত মাখা শার্টকে পতাকা বানিয়ে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ সারা দেশব্যাপী হরতাল ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করল। এতেও দমল না সামরিক সরকার। কিন্তু আসাদের রক্তমাখা শার্ট নিয়ে শপথ নেওয়া ছাত্র জনতা ক্রমাগত আন্দোলন চালিয়ে যেতে লাগল, আন্দোলন জঙ্গীরূপ ধারণ করল। আবারও শহীদ হলো নবকুমার ইনস্টিটিউটের নবম শ্রেণির ছাত্র মতিউর; প্রাণ দিতে হলো রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক ডা: শামসুজ্জোহাকে। অবশেষে ছাত্র জনতার রোষানলে পড়ে আইয়ুব খান পদত্যাগ করল। কিন্তু ক্ষমতা হস্তান্তর করলেন সামরিক উর্দিপরা জেনারেল ইয়াহিয়াখানের কাছে। মোদ্দাকথা হলো, উনসত্তরের আন্দোলনের ত্যাগ ও সার্থকতার উৎস ছিল, প্রেরণা ছিল শহীদ আসাদের রক্তমাখা শার্ট। শহীদ আসাদ তোমায় লাল সালাম। ঢাকার আসাদ ঘেট তার নামেই নামাঙ্কিত করা হয়েছে।
শাফায়েত জামিল রাজীব
প্রধান সম্পাদক
একুশে টাইমস্ বিডিডটকম