সোমবার, ২০ মার্চ ২০২৩, ০৭:৩২ অপরাহ্ন
মোঃ মাইন উদ্দিন, কুলিয়ারচর প্রতিনিধি : পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে মালয়েশিয়ায় গিয়ে লাশ হয়ে দেশে ফিরছেন কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের খান বাড়ির মৃত সিরাজুল ইসলাম খানের পুত্র আবুল কালাম খান। মালয়েশিয়া প্রবাসী আবুল কালাম খান গত ২৩ আগস্ট হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মালয়েশিয়াতেই মৃত্যু বরণ করেন। মালয়েশিয়ার আনুষ্ঠানিকতা শেষে মৃত্যুর ১৫ দিন পর ৮ সেপ্টেম্বর তার মরহদেহ ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসে। ওইদিন বিমানবন্দর কতৃপক্ষ সরকারি নিয়মানুযায়ী সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে লাশের কফিন স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেন। স্বজনরা শুক্রবার ৯ সেপ্টেম্বর সকালে লাশবাহী এম্বুলেন্স নিয়ে বাড়িতে এসে পৌঁছলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। স্বজনদের কান্না আর আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠে। স্বজনরা এম্বুলেন্স থেকে লাশের কফিন মাটিতে নামায়। মাটিতে নামানোর সাথে সাথে লাশের কফিন জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে এক বৃদ্ধা নারী। জানা যায়, ওই নারী আর কেউ নয়, মরহুম আবুল কালাম খানের মমতাময়ী মা। যিনি আবুল কালামকে কুলে পিঠে করে বড় করেছিল। মায়ের বয়স এখন ১১০ বছর। এ বয়সে সন্তানের লাশের কফিনে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে হবে কে জানতো। অপর দিকে- জানাজা নামাজ ও দাফনের জন্য বাড়ি থেকে লাশ বাহির করার সময়- “আমি বাবার সাথে যাবো, আমার বাবা একা একা ভয় পাবে” এই বলে চিৎকার করছিল এক কিশোরী। জানা যায়, ওই কিশোরী আর কেউ নয়, আবুল কালাম খানের মেয়ে। নাম আনিকা খানম। সে ভৈরব জিল্লুর রহমান মহিলা কলেজে পড়ুয়া ছাত্রী। তারা তিন বোন। অর্থাৎ আবুল কালাম খান তিন কন্যা সন্তানের জনক। সকাল ১১ টায় আবুল কালাম খানের বাড়ি সংলগ্ন ৩৮ নং বাংলা বাজার সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয় মাঠে তার জানাজা নামাজ শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। আবুল কালাম খানের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শোক প্রকাশ করেছে কুলিয়ারচর উপজেলার একটি প্রবাসী সংগঠন “কুলিয়ারচর প্রবাসী সম্প্রীতি ফোরাম।” জানাজা নামাজের পর সংগঠনটির পক্ষ থেকে মরহুম আবুল কালাম খানের পরিবারকে ১ লক্ষ টাকার একটি আর্থিক সহায়তার চেক তার বড় মেয়ে আনিকা খনমের হাতে তুলে দেন সংগঠনের কেন্দীয় কমিটির প্রধান উপদেষ্টা মোঃ এমরান মিয়া। এ সময় সংগঠনের আরো একাধিক নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।