শনিবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:২৬ পূর্বাহ্ন
এম.এ হালিম,বার্তা সম্পাদক:
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে শতাধিক অবৈধ মশার কয়েল কারখানা। এসব কারখানার নেই কোন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। যত্রতত্র এসব কারখানা গড়ে উঠায় মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে এলাকাবাসী। এসব কারখানায় প্রায়ই অগ্নিকান্ডে হতাহতের ঘটনা ঘটলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথ কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষুদ্ধ স্থানীয়রা। অবৈধ কারখানার মালিকরা কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিলেও সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। তাই এসব অবৈধ মশার কয়েল কারখানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন বৈধ কারখানাগুলোর মালিকসহ ও স্থানীয়রা।
জানাযায়, ভৈরবে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে শহরের জগন্নাথপুরের লক্ষীপুর, তাতারঁকান্দি, কমলপুর, পঞ্চবটি, ঘোড়াকান্দা, ভৈরববাজারের আবাসিক এলাকায় বৈধ-অবৈধভাবে শতাধিক মশার কয়েল কারখানা গড়ে উঠেছে। এদের মধ্যে বৈধ রয়েছে ২২টি এবং অবৈধভাবে আরো প্রায় শতাধিক মশার কয়েল কারখানা রয়েছে। তবে অবৈধ এসব কারখানার পরিবেশ ছাড়পত্র,বিএসটিআইর অনুমোদন নেই। নেই অগ্নিনির্বাপনের ব্যবস্থা । অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা না থাকায় প্রায়ই কারখানায় অগ্নিদগ্ধে হতাহতের ঘটনা ঘটছে। এমনকি কেমিষ্ট ও নেই। নিজেরাই অনুমান করে কেমিক্যাল দিয়ে নি¤œমানের এসব কয়েল উৎপাদন করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করে মানুষকে প্রতারিত করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। কিন্ত সরকার হারাচ্ছে মোটা অংকের রাজস্ব। তাছাড়া আবাসিক এলাকায় এসব কয়েল কারখানা গড়ে উঠায় কেমিক্যালের ধোয়ায়ঁ শিশুসহ সব বয়সের মানুষ শ্বাসকষ্ট,এ্যাজমা,চোখ জ্বালাপোড়া করা ও মাথাব্যথাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের ঝুঁকি বাড়ছে ।
এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ বুলবুল আহমেদ জানান, আবাসিক এলাকায় মশার কয়েল কারখানার কয়েল তৈরীতে যে ক্যামিক্যার ব্যবহার করা হয়। তা মানবদেহের শ্বাসকষ্ট,এ্যাজমা,চোখজ্বালাপোড়া করাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হবে। তাই আবাসিক এলাকায় কয়েল কারখানা যেন গড়ে না উঠে ।
সিংকঃ এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা রুবাইয়াত তাহরীম সৌরভ জানান, আবাসিক এলাকায় আগে কিভাবে কয়েল কারখানা গড়ে উঠেছে তা তিনি বলতে পারবেননা। তবে নতুন করে আবাসিক এলাকায় পরিবশে অধিদপ্তর থেকে কোন ছাড়পত্র দেয়া হচ্ছেনা। এছাড়া অবৈধ এসব কারখানার বিরুদ্ধে শীগগিরই অভিযান পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে ভৈরববাজার ফায়ার ষ্টেশনের সাব-অফিসার শামসুল হক জানান, ভৈরবে মশার কয়েল কারখানায় অগ্নি নির্বাপনের ব্যবস্থা না থাকায় প্রায়ই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি অগ্নিকান্ডে ১জন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। অগ্নিকান্ড থেকে বাচঁতে জনগনকে সতর্ক, সচেতন ও মহড়া প্রদান করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ জানান, ভৈরবে বিএসটিআই ও পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া মশার কয়েল কারখানার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অভিযান চলবে এবং দ্রুত এসব কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে ভৈরব কয়েল কারখানা মালিক এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক ও বাংলাদেশ মসকিটু কয়েল মেনুফেকচারিং এসোসিয়েশনের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক মুরাদ আহমেদ জানান, ভৈরবে ২২টি কয়েল কারখানার বিএসটিআইয়ের অনুমোদন আছে বাকি প্রায় শতাধিক কয়েল কারখানার অনুমোদন নেই। তারা অবৈধভাবে নিম্নমানের কয়েল তৈরী করে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে।
এ বিষয়ে বিএসটিআইএর উপ-পরিচালক মোঃ রিয়াজুল হক জানান, সারা বাংলাদেশে ১শ ২৫ টি কয়েল কারখানার বিএসটিআইয়ের অনুমোদন রয়েছে। তবে অননুমোদিত কারখানার সংখ্যা কত তা তিনি বলতে পারেননি। অননুমোদিত কয়েল কারখানার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান তিনি।