শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৬:৪৬ অপরাহ্ন

মাদক ব্যবসায় বাঁধা দেয়ায় ছেলে কর্তৃক মায়ের কবর খনন

মাদক ব্যবসায় বাঁধা দেয়ায় ছেলে কর্তৃক মায়ের কবর খনন

সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার:
কিশোরগঞ্জে জেলা সদরের লতিবাবাদ ইউনিয়নের বড়বাগ গ্রামে ছেলে ও পুত্রবধুকে মাদক ব্যবসায় বাঁধা দেয়ায় মা রেখা বেগম (৬৫) কে জীবিত কবর দেয়ার জন্য সম্প্রতি একটি কবর খননের অভিযোগ উঠেছে ছেলে উজ্জল মিয়ার বিরুদ্ধে। এ বিষয় তার বাবা জিলু মিয়া ও তার মা রেখা বেগম গত রবিবার (২৮ আগষ্ট) জেলা পুলিশ সুপার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, জেলা সদরের লতিবাবাদ ইউনিয়নের বড়ভাগ গ্রামের মো: জিলু মিয়ার পুত্র উজ্জল মিয়া (৩২) ও তার স্ত্রী চম্পা বেগম (২৫) সহ অজ্ঞাত নামা আরো বেশ কয়েকজনের সহায়তায় এলাকায় মাদক ব্যবসা গড়ে তোলে। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ এলাকায় মাদক বিক্রি ও উক্তিবয়সী তরুণদের মাদক সেবনে অভ্যস্ত করায় পুরো গ্রামের মানুষের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। মাদক বিক্রিতে বাঁধা দিলে তার বাবা জিলু মিয়া ও মা রেখা বেগমকে অমানসিকভাবে শারীরিক নির্যাতনসহ তার মাকে জীবিত কবর দেওয়ার জন্য হুমকিপ্রদান সহ সম্প্রতি বাড়ির আঙিনায় একটি কবরও খুঁড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে মাদক ব্যবসায়ী উজ্জল মিয়ার বিরুদ্ধে। এতে এলাকার যুবসমাজসহ স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসাগামী ছাত্র-ছাত্রীও মাদকাসক্তের কবলে পরে। তার মা এর প্রতিবাদ করায় গত ১৫ আগষ্ট এলাকার লোকজনের সামনে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে। পরে তার ডাক চিৎকারে এলাকাবাসী কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। শারীরিক নির্যাতন থেকে রেহাই পাননি জন্মদাতা পিতা মো: জিল্লু মিয়াও। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে তার মাদকের রমরমা ব্যবসা।
সূত্র জানায়, বহিরাগত অগন্তক বন্ধু-বান্ধবের সহযোগিতায় উজ্জল মিয়া, পাঁচ থেকে ছয় বছর ধরে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বিভিন্ন বয়সের যুবকদের এলাকায় এনে তাদের কাছে মাদক বিক্রি করে আসছে। এ ব্যাপারে কেউ কোন প্রতিবাদ করলে তাদের উপর রামদা, দাও, বটি, চাকু নিয়া আক্রমন করে। পুরো গ্রামকেই তিনি মাদকের জোয়ারে ভাসিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে অভিযোগ করে বলেন, ‘উজ্জল ও তার স্ত্রী চম্পা বেগম গত কয়েক বছর আগে মাদক মামলায় জেল থেকে জামিনে এসেছে। আমরা তাদেরকে অনেক বলছি। বিভিন্ন পাড়া মহল্লা থেকে যুবকরা এখানে মাদক সেবন করে। আমাদের ছেলে মেয়ে রাস্তাঘাটে চলা ফেরা করতে পারে না। আমরা সবসময় এদের ভয় আতঙ্কিত থাকি।
তার মা রেখা বেগম ও বাবা জিলু মিয়া বলেন, ‘আমার ছেলে উজ্জল ও পুত্রবধু চম্পা বেগম বহিরাগত লোকজনের সহায়তায় পাঁচ থেকে ছয় বছর যাবৎ মাদক বিক্রি ও সেবন করে আসছে। আমি ও আমার স্বামী বাঁধা দিলে আমাদেরকে এলাকাবাসীর সামনে মারধর করে ও জানে মারে ফেলার হুমকি দেয়। আমাকে জীবিত কবর দেওয়ার জন্য বাড়ির উঠানে একটি কবরও খুঁড়েছেন। আমরা এখন বাড়ি ছাড়া। আমার ছেলের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’
এ বিষয় কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপার মো: শেখ রাসেল বলেছেন, ‘উজ্জল মিয়ার মা বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। আমি অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথেই একজন অফিসারকে দায়িত্ব দিয়েছি। অতিদ্রুত অভিযুক্ত উজ্জলকে আইনের আওয়তায় এনে ব্যবস্থা নেব।

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana