শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০৪ পূর্বাহ্ন

মৃত্যুর ১ যুগ পর ছোট ভাই’র আইডিকার্ডে তিনি জীবিত

মৃত্যুর ১ যুগ পর ছোট ভাই’র আইডিকার্ডে তিনি জীবিত

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:

১৪ বছর আগে মারা যান ছমির উদ্দিন ছমু, তাকে ২০২০সালে জীবিত দেখিয়ে তার নামের রেকর্ড ভুক্ত ৯০শতাংশ জমি রেজিষ্ট্রি করা হয়েছে অষ্টগ্রাম সাবরেজিস্ট্রি কার্যলয়ে। দলিল লেখক জীবিত ব্যাক্তির জাতীয় পরিচয়পত্রের সাথে জুড়ে দিয়েছেন মৃতের নাম। এমনই প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ জেলা রেজিষ্ট্রার কার্যালয়ে রোববার লিখিত অভিযোগ করেছেন মৃত মালিকের ছেলে মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম।
ঘটনাটি কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা অষ্টগ্রামের আদমপুর ইউনিয়নের বরাগিরকান্দি গ্রামে।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, অষ্টগ্রাম উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি কার্যালয়ে, ২০০৮ সালে মৃত ‘ছমির উদ্দিন ওরফে ছমু’কে, জীবিত দেখিয়ে তার আপন ছোট ভাই জাতীয় পরিচয়পত্র মতে ‘মোঃ জামির উদ্দিন’, দলিলে ‘ছমির উদ্দিন ওরফে জামির উদ্দিন’ নামে ৯০শতাংশ জমি, নিজের মেয়েকে দানপত্র দলিল রেজিষ্ট্রি করে দেন ২৩ ডিসেম্বর ২০২০সালে।
প্রয়াত ছমির উদ্দিন ছমু’র ওয়ারিশ ও ক্রয়সুত্রে, আর.এস ভুক্ত জমি আত্মসাৎে সহায়তা করতে মোঃ জামির উদ্দিন (প্রয়াতের আপন ছোট ভাই) কে মালিক সাজিয়ে ও দলিলে মিথ্যা তথ্য লিপিবদ্ধ করেন দলিল লেখক নুরুল। প্রতারক চক্রের সাথে মিলেমিশে, জাল দলিল সম্পাদনে সহায়তাকারী নুরুল আলমের ‘দলিল লেখক সনদ’, সম্পাদিত দলিল বাতিল ও জালিয়াত চক্রের শাস্তি এবং ক্ষতিপূরণ দাবী করেন আবেদনকারী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মোঃ জামির উদ্দিন বিভিন্ন সময়ে তার একাধিক জমি, দলিলমুলে বিক্রি করেন বড় ভাই ছমির উদ্দিন ওরফে ছমু’র নিকট। আবার ২১জুন ১৯৭৫ সালে জামির উদ্দিন ও ছমির উদ্দিন দুই ভাই যৌথভাবে মা জামিলা খাতুন হতে ৫৫ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। ২০০৮ সালে মৃত্যু বরণ করেন ছমির উদ্দিন। সাম্প্রতিক মোঃ জামির উদ্দিন (জাতীয় পরিচয়পত্র মতে) নিজেক ‘ছমির উদ্দিন’ ওরফে জামির উদ্দিন’ বলে প্রয়াত ছমির উদ্দিনের সম্পদ ও সম্পত্তি আত্মসাৎের চেষ্টা করে আসছেন বলে অভিযোগ করেন।
এই ভূয়া দলিলটি, দলিলদাতা, দলিল লেখক নুরুল আলমের সনদ বাতিল ও দলিল সম্পাদনে সংশ্লিষ্টদের তদন্তপূর্বক শাস্তি ও ক্ষতিপূরন দাবী করে লিখিত অভিযোগ করেন ছমির উদ্দিন ছমু’র ছেলে মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম।
মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, আমার পিতা ছমির উদ্দিন ছমু, আমার ছোট চাচা মোঃ জামির উদ্দিন হতে একাধিক জমি ক্রয় করার দলিল রয়েছে। ওনারা দুই ভাই ৭৫ সালে যৌথভাবে দাদির নিকট হতে জমি ক্রয় করেন। তারপরো, চাচা, দলিল লেখক নুরুল আলমের সহযোগিতায় আমাদের সম্পদ ও সম্পত্তি আত্মসাৎের চেষ্টা করছেন। আমি তদন্তপূর্বক সংশ্লিষ্টদের শাস্তি দাবী করছি।
অভিযুক্ত দলিল লেখক নুরুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, দলিলকৃত ভূমির রের্কডে মালিক ছমির উদ্দিন নামটি থাকায়, স্থানীয় চেয়ারম্যানের প্রত্যায়নের প্রেক্ষিতে দলিলে ছমির উদ্দিন ওরফে জামির উদ্দিন লেখা হয়েছে। ‘দলিলগ্রহীতার ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র অনুসরণ করা ও কোন প্রত্যয়ন ছিলো কিনা প্রশ্নে’ বলেন, না। দাতার মেয়ে, তাই একইভাবে লেখা হয়েছে।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা রেজিষ্ট্রার মোঃ আবু তালেব সাংবাদিকদের বলেন, আবেদন পেয়েছি। এবিষয়ে অষ্টগ্রাম অফিসে তথ্য চাওয়া হয়েছে। এখনও তথ্য আসেনি, তথ্য হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana