বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৭:১৪ অপরাহ্ন

ভৈরবে সন্ত্রাসি হামলায় গর্ভের সন্তান হত্যার বিচারের দাবিতে মায়ের সংবাদ সম্মেলন

ভৈরবে সন্ত্রাসি হামলায় গর্ভের সন্তান হত্যার বিচারের দাবিতে মায়ের সংবাদ সম্মেলন

এম.এ হালিম, বার্তাসম্পাদক :
ভৈরবে অন্তঃসত্বা মায়ের উপর সন্ত্রাসি হামলায় গর্ভের সন্তান হত্যা মামলার আসামী গ্রেফতার ও দ্রুত বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী মা তামান্না বেগম। তিনি পৌর শহরের আমলাপাড়া ওয়াপদা মোড় এলাকার পায়েল মিয়ার স্ত্রী। আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টায় ভৈরব পৌর শহরের কমলপুর এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে তামান্না বেগম জানান, একই এলাকার জনৈক মিলন মিয়ার সাথে তামান্নার স্বামী পায়েল মিয়ার দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৩মার্চ দুপুর আনুমানিক দেড়টার দিকে মিলন ও তার অন্যান্য সহযোগিরা পায়েল মিয়াকে তার নিজ বাড়ি থেকে জোরপূর্বক অপহরণের চেষ্টা করে। এসময় পায়েলের সাত মাসের অন্তঃসত্বা স্ত্রী তামান্না এতে বাধা প্রদান করলে প্রধান অভিযুক্ত মিলন মিয়া তামান্নার তলপেটে স্বজরে লাথি মেরে ফেলে দেয় এবং তার স্বামী পায়েলকে জোরপূর্বক মিলন মিয়া তার নিজ বাড়ির ভেতরে নিয়ে যায়। পরে পুলিশি সহযোগিতায় পায়েল মিয়াকে উদ্ধার করা হয়। এঘটনার দুদিন পর ২৫মার্চ, পায়েলের স্ত্রী তামান্না বাদী হয়ে এ সংক্রান্তে মিলন মিয়াকে প্রধান আসামীসহ মোট চারজনের নাম উল্লেখ করে বিজ্ঞ আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন, অলি মিয়া (২২), কালাম মিয়া (৫০) ও সাইমন (২৩)। পরে বিজ্ঞ আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্ট থানাকে এফ.আই.আর এর নির্দেশ দেন। এতে করে আরো ক্ষীপ্ত হয় প্রতিপক্ষ মিলন ও তার সহযোগিরা। পরবর্তীতে ২৯মার্চ দুপুর আনুমানিক আড়াইটার দিকে আমলাপাড়া ওয়াবদা মোড়ের কাঞ্চন মিয়ার ভাড়া বাসায় অবস্থান করছিলেন তামান্না বেগম। এসময় মিলন মিয়াসহ তার অন্যান্য সহযোগিরা তামান্নার উপর হামলা চালায়। হামলায় অন্তঃসত্বা মা তামান্নার তলপেটে একাধীক লাথির আঘাত করায় সে গুরুতর আহত হয়ে পড়ে। এসময় তামান্নার ডাক-চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসে এবং হামলাকারি মিলন গংদের হাত থেকে তামান্নাকে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে হাসপাতালের চিকিৎসক প্রাথমিক পরীক্ষায় তামান্নার গর্ভের সন্তানের নড়াচড়া টের না পেয়ে আল্ট্রাসোনাগ্রাম পরীক্ষা করেন। পরীক্ষার রির্পোটে আঘাত জনিত কারণে ইতোমধ্যে তামান্নার গর্ভে থাকা অনাগত সন্তানের মৃত্যু হয়েছে এবং এ অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে মৃত বাচ্চাটি প্রসব করা না হলে মায়ের জীবন ঝুকিঁতে পড়বে বলে জানান চিকিৎসক। পরদিন ভোর ৬টার দিকে একটি মৃত সন্তান প্রসব করে তামান্না।

তামান্না অভিযোগ করে আরো বলেন, আমার স্বামীর সাথে চলমান বিরোধকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিত ভাবে আমার গর্ভের সাত মাসের সন্তানকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যেই এ হামলা চালানো হয়। এছাড়াও মামলার তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ করে তামান্না বলেন, এ মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। অথচ আসামীরা এলাকায় দাপটের সহিত ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং মামলা তুলে নিতে অনবরত বিভিন্ন ভয়-ভীতি প্রদর্শন করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

সবশেষে আসামীদের গ্রেফতারের আওতায় এনে দ্রুত বিচারের দাবি জানান ভুক্তভোগী মা তামান্না বেগম। সংবাদ সম্মেলণে ভুক্তভোগী পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাসহ স্থানীয় প্রিন্ট, ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

 

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana