সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩, ০১:৪৮ অপরাহ্ন

কুলিয়ারচরের বাংলা বাজার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ২৮ বছরেও হয়নি এমপিওভুক্ত

কুলিয়ারচরের বাংলা বাজার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ২৮ বছরেও হয়নি এমপিওভুক্ত

মোঃ মাইন উদ্দিন , কুলিয়ারচর প্রতিনিধি : প্রয়োজনীয় ঘর রয়েছে। আছে পর্যাপ্ত জায়গা। শিক্ষার্থীরা জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফলও করছে। এরকম সব ধরনের শর্ত পূরণ করা সত্বেও এমপিওভুক্ত হচ্ছে না কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের “বাংলা বাজার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়।” বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হওয়ার ২৮ বছরেও এমপিওভুক্ত না হওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছে শিক্ষক-কর্মচারীরা। জানা যায়, আলহাজ্ব এ.কে.এম কামাল উদ্দিন, আলহাজ্ব আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, মোঃ শহীদ উল্লাহ, আয়ুব খান ও মোনায়েম খানসহ স্থানীয় শিক্ষানুরাগী, সমাজসেবী মিলে ১৯৯৪ সালের ২ ডিসেম্বর বিদ্যালয়টি প্রতিষ্টিত করেন।প্রতিষ্টা লগ্ন থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদান করে আসলেও ২০১২ সালে জুনিয়র স্কুল হিসেবে পাঠদানের অনুমতি পায়। এরপর ২০১৫ সালে জুনিয়র থেকে নিম্নমাধ্যমিক স্কুল হিসেবে একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করে। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ৩১৫ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছে। চালু রয়েছে ব্যবসা, শিক্ষা, মানবিক ও বিজ্ঞান বিভাগ। প্রতি বছর ভালো ফলাফল করছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে ১৫ জন। গত (১৪ জুন) মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিন বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে বাংলা বাজার। বাজারের উত্তর পাশে বাজারের নামেই অত্যন্ত কোলাহলমুক্ত পরিবেশে ৮২ শতাংশ ভুমির উপর প্রতিষ্টিত হয়েছে বিদ্যালয়টি। আছে শিক্ষার্থীদের জন্য খেলার মাঠসহ অন্যান্য সুবিধা। নিম্নমাধ্যমিক এমপিওভুক্তির সকল শর্ত পুরণ হওয়ার পরও বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারীরা সব ধরণের সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্ছিত হচ্ছে। সকল কাজে নামমাত্র চলে হাই স্কুল, সুযোগ সুবিদার ক্ষেত্রে জুনিয়র স্কুল। শিক্ষক-কর্মচারীরা শ্রম দিলেও তারা সঠিক মূল্যায়ন পাচ্ছে না। এমনকি দ্রব্য মূল্যের লাগামহীন অবস্থার মধ্যে কোন রকমে চলছে তাদের দিনকাল। বলতে গেলে সেই প্রবাদ বাক্যটির মত, যেমন “নুন আনতে পান্তা ফুরায়।” বিদ্যালয় মাঠে৷ কথা হয় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আল-আমীন ভূঁইয়া টিংকুর সাথে। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, বিদ্যালয়টি প্রতিষ্টিত হওয়ার পর তিনবার ঐতিহ্যবাহি দল আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার পরও বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত না হওয়াটা আমাদের ফরিদপুরবাসীর জন্য অত্যন্তই দুর্ভগ্যজনক। তিনি বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্তি করার জন্য প্রয়াত রাষ্ট্রপতি আলহাজ্ব জিল্লুর রহমান এর সুযোগ্য পুত্র ভৈরব-কুলিয়ারচর আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নাজমুল হাসান পাপন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করেন। কথা হয় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব আলমগীর হোসেন ভূঁইয়ার সাথে। তিনি জানান, বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পাঠদানসহ শিক্ষার গুণগত মান বজায় রেখেছে। শিক্ষার্থীরা পাবলিক পরীক্ষায় ভালো ফলাফলও করছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বিদ্যালয়টি হাই এমপিওভুক্ত না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মচারীরা আর্থিক সঙ্কটে দিন কাটাচ্ছেন। তিনি বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত করার জন্য এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি আলহাজ্ব জিল্লুর রহমানের সুযোগ্য পুত্র স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বিসিবির সভাপতি আলহাজ্ব নাজমুল হাসান পাপন ও সরকারের কাছে জোর দাবি জানান। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সৈয়দা নাছিমা আক্তার জানান, বিদ্যালয়টি হাই এমপিওভুক্তির জন্য সকল শর্ত পুরন করেছে আরও অনেক আগেই। জুনিয়র স্কুল হিসেবে ২০১২ সালে এমপিও’র অনুমোদন পায় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকা থেকে ২০১৫ সালে নিম্মমাধ্যমিক স্কুল হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। সেই থেকে এখন পর্যন্ত আমরা নিম্নমাধ্যমিক স্কুল হিসেবে বিদ্যালয়টির কার্যক্রম চালিয়ে আসলেও সুযোগ সুবিদা পাচ্ছি জুনিয়র স্কুল হিসেবে। যা আমাদের জন্য খুবই কষ্টের। ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এস.এস.এম আজিজ উল্ল্যাহ বলেন, আমার মনে হয় কুলিয়ারচরে আর কোনো নিম্নমাধ্যমিক স্কুল এমপিওভুক্তি হওয়ার বাকি নেই। তিনি এ বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্তি করার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানান।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana