বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪৭ অপরাহ্ন

ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও বেড়েছে শিশু রোগী

ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও বেড়েছে শিশু রোগী

একুশে ডেস্ক:
রাজধানী ও তার আশপাশের এলাকায় মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব বাড়তে শুরু করে। তবে  অস্বাস্থ্যকর খাবার, দূষিত পানি, গরমসহ নানা কারণে ঢাকার পাশাপাশি অন্যান্য জেলায়ও এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে। এর মধ্যে মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর’বি) বা কলেরা হাসপাতালে প্রতিদিন ১৩’শ বেশি বেশি রোগী ভর্তি হয়েছেন। তবে গত কয়েক দিনে কিছুটা কমে এসেছে। বর্তমানে দৈনিক রোগী হাজারের নিচে ভর্তি হচ্ছেন দেশের একমাত্র বিশেষায়িত এ হাসপাতালটিতে। তবে শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হাসপাতালটি সপ্তাহখানেক আগেও প্রায় ১৩০০ রোগী ভর্তি হতো। গত ৯ এপ্রিল থেকে তীব্র পানিশূন্যতা নিয়ে আসা রোগীর সংখ্যা কমে আসছে। তবে বর্তমানে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ৪০ শতাংশই শিশু। এর আগে প্রাপ্তবয়স্করা বেশি ভর্তি হতো। হাসপাতালটিতে চলতি মাসের ১৯ দিনে মোট ভর্তি হয়েছেন ২২ হাজার ৭ জন ডায়রিয়া রোগী। এর মধ্যে মঙ্গলবার বিকেল তিনটা পর্যন্ত ভর্তি হয়েছেন ৫৭২ জন। আর এর আগের দিন সোমবার ভর্তি হন ১ হাজার ৩৯ জন। এছাড়া গত মাসে (মার্চ মাসে) ভর্তি হন ৩০ হাজার ৩৭২ জন। অর্থাৎ এক মাস ১৯ দিনে বিশেষাষিত এ হাসপাতালটিতে মোট ভর্তি হয়েছেন ৫২ হাজার ৩৭৯ জন রোগী।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দেশে সাধারণত গরমকালে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। এ সময়ে বিশুদ্ধ নিরাপদ পানি পান করা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা, নিয়মিত সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়া, যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগ না করা, খোলা ও অনিরাপদ খাবার না খাওয়া- এসব বিষয়ে নজর রাখলে ডায়রিয়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে।
আইসিডিডিআরবি সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার যাত্রাবাড়ী, মুগদা, শনিরআখড়া, মানিকনগর, উত্তরখান, দক্ষিণখান, কড়াইল, মোহাম্মদপুর, মিরপুর ও ঢাকার বাইরের নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর থেকেও রোগী আসছে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে চিকিৎসার জন্য রোগীরা আসছেন। এখন পর্যন্ত ২৯ জনের মতো ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীকে কলেরা হাসপাতালে আনার পথে মারা গেছেন বলেও জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে,  রাজধানীসহ সারাদেশ থেকেই কিছুক্ষণ পরপরই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এমন অসংখ্য রোগী আসছেন এ কলেরা হাসপাতালে। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে চিকিৎসাসেবা নিতে সব রোগী ও স্বজনের একই আকুতি। স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি রোগী ভর্তি হওয়ায় হাসপাতালে মূল ভবনে ঠাঁই মিলছে না রোগীদের। নির্ধারিত শয্যাসংখ্যা ছাপিয়ে ভেতরের মাঠেও তাঁবু টানিয়ে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আর ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন ডাক্তার ও নার্সরা।
হাসপাতালে আসা পুরান ঢাকার বাসিন্দা ইমাদুল হক জানান, সোমবার রাত থেকে হঠাৎ শুরু হয় পাতলা পায়খানা। স্যালাইন খাওয়ার পর ভালো হয়নি। পরিস্থিতি খারাপ হলে দ্রুত তাকে তার ছেলে মহাখালীর আইসিডিডিআরবিতে ভর্তি করেন। এখন কিছুটা সুস্থ আছেন বলেও জানান তিনি।
মানিক নগরের বাসিন্দা রুমি আক্তার বলেন, তাদের বাসার পানিতে চরম ময়লা ও দুগন্ধ। মুখেও দেওয়া যায় না। বাড়ির মালিককে বার বার বলেও কাজ হচ্ছে না। আর এই দূষিত পানি খেয়েই তার ডায়রিয়া হয়েছে বলেই মনে করেন তিনি।
Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana