শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:০৫ অপরাহ্ন

একই দিনে নিয়োগ পরীক্ষা কমানোর উদ্যোগ

একই দিনে নিয়োগ পরীক্ষা কমানোর উদ্যোগ

একই দিনে একাধিক সরকারি চাকরির পরীক্ষা যাতে অনুষ্ঠিত না হয়, সে উপায় খুঁজছে সরকার। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে নিশ্চিত করতে এবং কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় তা খতিয়ে দেখতে এটুআইকে (অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন) নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে আসার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি নিয়োগ শুরু হয়েছে। দ্রুত নিয়োগ কার্যক্রম নিশ্চিত করতে ছুটির দিনগুলোতে কোনো কোনো সপ্তাহে ১৫-১৮টি পর্যন্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরির পরীক্ষা হচ্ছে। এতে বঞ্চিত হচ্ছেন অনেক চাকরিপ্রার্থী।

এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) সামসুল আরেফিন যুগান্তরকে বলেন, বিষটির গুরুত্ব অনুধাবন করে উদ্যোগ নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা এটুআইকে দেওয়া হয়েছে। তারা কোনো সমাধান বের করতে পারলে উপযুক্ত উদ্যোগ নেওয়া হবে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এমন উদ্যোগকে চাকরিপ্রার্থী এবং চাকরিসংশ্লিষ্ট সবাই ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসাবে অভিহিত করছেন।

এটুআই প্রকল্পের পরিচালক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, চাকরির পরীক্ষার জন্য একটি সমাধানের উদ্যোগের বিষয়ে আমরা নির্দেশ পেয়েছি।

সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও নেওয়া হচ্ছে। সরকারের সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের জন্য বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলও (বিসিসি) একটা উদ্যোগ নিচ্ছে। বিসিসির উদ্যোগের সঙ্গে যাতে আমাদের কোনো দ্বৈধতা না হয় সে বিষয়টি বিবেচনা করে এগুচ্ছি। আশা করি, ভালো ফল আসবে।

এদিকে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, একই দিনে অনেক পরীক্ষার বিষয়টি নিয়ে তারাও উদ্যোগ নেওয়ার চিন্তা করেছিলেন। কিন্তু বড় কোনো উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব নয় বলে শীর্ষ কর্মকর্তাদের কেউ কেউ মত দিয়েছেন। তাই এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো উদ্যোগের দিকে এগোয়নি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

তবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, এটুআই যদি তথ্য-প্রযুক্তির কোনো বিশেষ প্রক্রিয়ায় সমাধান বের করতে পারে সেটা ভালো উদ্যোগ হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগ থেকে পাশ করে বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন মাসুদ হাসান। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উদ্যোগের বিষয়ে তিনি বলেন, একটি ভালো সমাধান আশা করছি। সরকারি চাকরির নিয়োগ সহজে পাওয়া যায় না। এখন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ এলেও একই দিন একাধিক পরীক্ষা থাকায় অনেকে পারছেন না। টাকা খরচ করে পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারা খুবই আক্ষেপের ব্যাপার। আশা করি ইতিবাচক পথ বের হবে।

উল্লেখ্য, করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর প্রায় দুই মাস (জরুরি ছাড়া) সব সরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। এমনিতেই সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা দীর্ঘসূত্রতায় আটকে থাকে। এর মধ্যে মহামারির দুই বছরে সেটা আরো বেশি অচলাবস্থা তৈরি করেছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় গত বছর দুই দফায় সরকারি চাকরির নিয়োগে গতি আনতে নির্দেশ দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

এতে প্রায় সব সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এতে শুক্রবার ছুটির দিন পরীক্ষা অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে গিয়ে একই দিনে অনেক বেশি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষা নিতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে একাধিক মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বললে তারা যুগান্তরকে জানান, সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে নিয়োগ কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে চাপ আসছে। তাই তাদের মূল লক্ষ্য দ্রুত পরীক্ষা নিয়ে নিয়োগ সম্পন্ন করা।

তারা আরও জানান, ঢাকায় নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়ার প্রতিষ্ঠানেরও স্বল্পতা আছে। তাই যারা যখন যেভাবে শিডিউল পাচ্ছে সেভাবেই পরীক্ষা নিয়ে নিচ্ছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক কোনো উদ্যোগ কাজে আসবে না। সরকার কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো উদ্যোগ নিলে সেটা কার্যকর ফল দিতে পারে।

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana