রবিবার, ২৮ মে ২০২৩, ১১:২৪ অপরাহ্ন
‘স্বাধীনতা তুমি রবি ঠাকুরের অজয় কবিতা, অবিনাশী গান। স্বাধীনতা তুমি কাজী নজরুলের কাকড়া চুলের বাবরি দোলানো, মহান পুরুষের সৃষ্টি সুখের উল্লাসে কাঁপা।’ কবিতাটি আবৃত্তি করতে করতে আজাদের মগবাজারের বাসার ছাদে একদিন রুমী, বদি, হাবিবুল আলম, কাজী কামাল গংরা আড্ডা দিতে শুরু করল। আবৃত্তি শেষ হতে না হতেই রুমী বলে উঠল, বদি ভাই তোমার মনে আছে- খালেদ মোশাররফ আমাদেরকে শেষ বিদায় ভাষনে বলেছিলেন একটি কথা ‘ তোমরা পাক বাহিনীকে তিন দিক দিয়ে আক্রমন করবে। ওদেরকে সামরিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ভাবে নাস্তানাবুদ করবে। এটাই গেরিলাদের কাজ। রুমির কথা শুনে আহম্মদ কামাল, সামাদ, বদি, আজাদ, খোকা, বাশার প্রমুখ গেরিলারা সিদ্ধান্ত নিল, আগামীকালকে আবার আমরা অপারেশনে নামব। এবার রন কৌশলে ছক কষা হলো। আগামীকালকে অপারেশনে টার্গেট নির্ধারিত হলো। প্রথম টার্গেট হলো ফার্মগেটের কাছে কাবাব ঘরের সামনে পাক হানাদারদের ক্যাম্প। দ্বিতীয় টার্গেট হলো, ধানমন্ডির ২৭ নম্বর রোডে অবরুদ্ধ বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে মুক্ত করার সিদ্ধান্ত। এবং পরের দিন বিকেলেই সবাই মগ বাজারে একত্রিত হলো। চব্বিশ জন গেরিলা মুক্তিযোদ্ধার টিম চারটি ভাগে বিভক্ত হলো এবং প্রত্যেক দলে ছয় জন। এভাবে চারটি দলের নেতৃত্ব দিল বদি, রুমি, কাজী কামাল ও আজাদ। কিন্তু গাড়ি দুটি একটি আলমের আরেকটি রুমির। তৎক্ষনাৎ তারা সিদ্ধান্ত নিল মালিবাগ রেলক্রসিং থেকে দুটি গাড়ি ছিনতাই করে আরও দু’টি গাড়ি অপারেশনের কাজে লাগাবে। সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিকেল বেলায় ঢাকার সেই অভিজাত পরিবারের, সেই সব শিক্ষিত ছেলেরা জাতির স্বার্থে ভাল কাপড়-চোপর পড়ে চোখে সানগ্লাস লাগিয়ে বেরিয়ে পড়ল। সকলের কোমরেই অস্ত্র। বদি ও রুমির নেতৃত্বে দুটি গাড়ি গেল কাবাব ঘরের সামনে এবং পাক বাহিনীর উপর অতির্কিত হামলা করে ওরা এগার জন পাক সেনাকে নিহত করল। আর দুটি গাড়ি গেলো আজাদ এবং কামালের নেতৃত্বে ধানমন্ডিতে। তবে বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে মুক্ত করতে পারলো না। কিন্তু বাড়ির সামনে টহলরত তিনজন পাক সেনা নিহত করল। পূর্ব পরিকল্লনা অনুযায়ী দুটি গাড়ি আবার মিরপুর রোডে একত্রিত হলো। অপারেশন সাফল্য মন্ডিত হওয়ায় ওরা আবার মগ বাজারের দিকে গাড়ি ড্রাইভ করতে শুরু করলো। এমন সময় রুমি মনের আনন্দে গাড়ির ক্যাসেট প্লেয়ারে অন করল ‘ও আমার বাংলাদেশ …..ও আমার বাংলাদেশ’
শাফায়েত জামিল রাজীব
প্রধান সম্পাদক, একুশে টাইমস্