সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩, ০২:০০ অপরাহ্ন
বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা, কালজয়ী প্রতিভাবন চলচ্চিত্রকার আলমগীর কবিরের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হলো ‘ধীরে বহে মেঘনা’। মুক্তিযুদ্ধের গল্প ভিত্তিক এই চলচ্চিত্রের রূপালী পর্দায় দেখানো হয়েছে-একজন ভারতীয় তরুনী তার প্রেমিকের খোঁজে ৭১ পরর্তী সময়ে বাংলাদেশে আসে। অত:পর সে জানতে পারে তাঁর প্রেমিক অজয় রায় এয়ার ফোর্সের অফিসার হিসাবে আমাদের মুক্তির সংগ্রামে ভারতের পক্ষ থেকে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। অত:পর ডিসেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে পাক বাহিনীর সাথে সরাসরি যুদ্ধে ফেনীর কাছে বিলোনিয়া নামক এক স্থানে বিমান বিধ্বংসী কামান দ্বারা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেন। তদুপরি প্রেমিকা অরুন্ধতী রায় বাগদত্তা অবস্থায় প্রেমিকের মৃত্যুস্থল পরিদর্শন করেন। শুধু তাই নয়, বাংলার আকাশ-বাতাসকে ভালবেসে এদেশেই স্থায়ী হয়ে যান। আজীবন কুমারী এই নারী এদেশের যুদ্ধ বিধ্বস্ত অবস্থা দেখে আর প্রেমিকের ভালবাসর প্রতি সম্মান জানাতে গিয়ে গরীব বাচ্চাদের জন্য একটি স্কুল খুলেছিলেন। এছাড়াও যুদ্ধে নির্যাতিত ইজ্জতহারা নারীদের জন্য খুলেছিলেন এক পরামর্শ ও পুর্ণবাসন কেন্দ্র।
আলমগীর কবিরের তৃতীয় পূর্ণদৈঘ্য চলচ্চিত্রটি ছিল ভীষন ব্যবসা সফল। চলচ্চিত্রটির নাম ‘সীমানা পেরিয়ে।’ এই ছবির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো ’৭০ এর জলোচ্ছাসের দুই জন মানব-মানবী সমুদ্রে ভাসতে ভাসতে এক নির্জন দ্বীপে আশ্রয় নেয়। তারপর ধীরে ধীরে নির্জন দ্বীপে মানব-মানবীর মধ্যে গড়ে ওঠে আবেগময় প্রেম ও ভালবাসা।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আলমগীর কবির স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দে ইংরেজী সংবাদ পাঠকের দায়িত্ব নেন। তাঁর গুরু বা কমরেড ছিলেন কালজয়ী চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান। তার অনুপ্রেরণাই ’৭১ সনে ‘লিবারেশন ফাইটারর্স’ নামে একটি প্রামান্য চিত্র তৈরী করেন। যা দেশে ও বিদেশে বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়। প্রয়াত চলচ্চিত্রকার, সাংবাদিক আলমগীর কবির ছিলেন আমাদের গর্ব, আমাদের অহংকার। সে জন্য আজও স্মরনীয় ও বরণীয় হয়ে আছে।
শাফায়েত জামিল রাজীব
প্রধান সম্পাদক, একুশে টাইমস্