রবিবার, ২৬ মার্চ ২০২৩, ১২:৫৮ অপরাহ্ন
শ্যামল ছায়ায় ঘেরা বগুড়া শহরে গাবতলীর বাসবাড়ীতে ১৯৩৬ সনের ১৯শে জানুয়ারী একটি শিশুর জন্ম হয়েছিল। মৃদুভাষী ছেলেটির ডাক নাম ছিল কমল। আর পূর্ণনাম জিয়াউর রহমান। যিনি পরবর্তীকালে আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রামের এক মহানায়ক হয়েছিলেন-হয়েছিলেন জাতির ইতিহাসের অংশ। পিতা ছিলেন রেডিও পাকিস্তানের সরকারী চাকুরীজীবী; এই সুবাদে জিয়া কৈশোরের কিছু কাল করাচী শহরে কাটে। অত:পর ’৫৩ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করে। ’৬৫ সনে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের একজন কোম্পানী কমান্ডার হিসেবে বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করে। তারপর ’৭০ সনে অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ব্যাটালিয়ন কমান্ডার হিসেবে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন। একাত্তরের উত্তাল দিনগুলিতে উনি চট্টগ্রাম সেনানিবাসে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু ২৫ শে মার্চের কালো রাত্রির গণহত্যা তাঁর মনে দাগ কাটল। তদুপরি ২৭ শে মার্চ মেজর জিয়া বিদ্রোহ করল এবং অনুগত সৈন্যদের দিয়ে চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র দখল করে; বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষনা করতে গিয়ে সাহসিকতার সাথে বলেছিলেন ‘আমি মেজর জিয়া বলছি…’ শুধু তাই নয়, মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে একজন সেক্টর কমান্ডারের ও ‘জেড’ ফোর্সের অধিনায়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু সরকার তাকে ‘বীর উত্তম’ খেতাবে ভূষিত করেন এবং সেনাবাহিনীর উপ-প্রধান পদে অধিষ্ঠিত করেন।
তবে পঁচাত্তরের পরবর্তী সময়ে সামরিক প্রধান ও দেশের রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন সময়ে তার কিছু বিতর্কিত কর্মকান্ডের জন্য জনমনে বিভ্রন্তির সৃষ্টি করে। কারণ উনি ক্ষমতার মসনদকে রক্ষা করার জন্য শাহ আজিজুর রহমান ও মশিউর রহমান যাদুমিয়ার মতো স্বাধীনতাবিরোধীদেরকে প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন করেছিলেন। কর্ণেল তাহেরের মতো বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বিনা বিচারে ফাঁসি দিয়েছিলেন। গোলাম আজমের মতো রাজাকার কে নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। আর ইনকিলাব সম্পাদক আল বদর নেতা মাওলানা মান্নানের মতো বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের পুনর্বাসিত করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু খুনী মেজর গ্রুপকে বিদেশে কূটনৈতিক দুতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিলেন। আর এসব কার্মকান্ড এই মহান বীর মুক্তিযোদ্ধার ইমেজে কালিমা লেপন করেছে।
শাফায়েত জামিল রাজীব
প্রধান সম্পাদক, একুশে টাইমস্