শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৫৪ পূর্বাহ্ন
প্রথম পর্ব:
ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁয়ের এক ইউপি মেম্বার জিন্নাটুপি আর গালে কয়েকটি ছাগলদাড়ি নিয়ে ইসলামের ফতুয়াকে বিকৃত করে- অদ্যাবধি পর্যন্ত ১৫৬টি বিয়ে করে ফেললো। মেম্বার আবুল হোসেন সাহেব ৫৮ বছর বয়সেও ভীষন রমনীমোহন। আর উনার উর্দু, ফার্সি আর সংস্কৃত ভাষার উপর বিভিন্ন শ্লোক, খনারবচন আর উনার প্রতিপত্তিকে ব্যবহার করে প্রথমে কাবু করত অভিভাবক বৃন্দকে। তারপর অঁজপাড়া গায়ের মালেকা-ছালেকাদেরকে উনার জালে ফাঁসাত। এভাবে ক্রমান্বয়ে মেম্বার আবুল হোসেন ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক দর্জাল ৪ স্ত্রীকে বাড়িতে রাখল। বাকি ১৫২জনকে বিভিন্ন বেশ্যালয়, ড্যান্স ক্লাব প্রভৃতি স্থানে বিক্রি করে দিল। মূলত আবুল হোসেন ছিলেন একজন ছদ্দবেশী নারী পাচারকারী বা হিউম্যান ট্রাফিকিংয়ের একজন বড় মাপের হোতা।
শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারত-ভুটান ও পাকিস্তানে নারী পাচার করত। উনার কৌশলটি ছিল, উনি প্রথম দিন ফুল শয্যার রাতে মেয়েটিকে ভোগ করত। তারপর মধুচন্দ্রিমা বা হানিমুনের নামে মেয়েটি বিভিন্ন বড়বড় শহরের হোটেলে নিয়ে যেত। কিংবা কোন দর্শনীয় স্থানে নিয়েযেত। এরপর কৌশলে মেয়েটিকে তুলে দিতো নারী পাচার কারীদের হাতে- মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে। লুণ্ঠিত হতো অবলা মেয়েটির ইজ্জত-সম্ভভ। তদুপরি একদা মেম্বার সাহেব ঢাকার অভিজাত এলাকালার এক হোটেলে ফুলবানু নামের এক অবলা নারীকে বিক্রি করে দিলো। আর ঐ হোটেলের খদ্দেরদের মধ্যে কেউ যেত মদ খেতে, কেউ যেত নারীদের দেহ ভোগ করতে, কেউ যেত জুয়া খেলতে। এমনি এক পরিবেশে ফুলবানুর জীবনে গোলাপ ফুটল এক মাতাল নায়ক প্রেমমই আবেগ দ্বারা।
দ্বিতীয় পর্ব:
ফুলবানু ওরফে দৃশ্যায়িত নায়িকা মৌসুমী প্রতিদিনই খদ্দেরের আশায় রূপসজ্জায় সজ্জিত হয়ে; দু’তালার সিড়িকোঠার চৌকাটে দাঁড়িয়ে থাকতো। এটা তার ইচ্ছাগত বিষয় ছিল না, বাধ্যগত পরিস্থিতি ছিল। আবার একই রাস্তায় এক দিশেহারা টাইফের যুবক শাকিল যেত মদ্যশালার ঘরটিতে। কিন্তু শাকিলের নারী বা জুয়ার প্রতি কোন আকর্ষন ছিল না। মদই ছিল তার নেশা ও পেশা। প্রায়ই মৌসুমীর সঙ্গে শাকিলের দৃষ্টি বিনিময় হতো। এভাবে কিছুদিন যেতে যেতে ‘পড়েনা চোখের পলক’ গানের মতো- একে অপরকে ভালবেসে ফেলল। এবার মাতাল শাকিল প্রেমিক শাকিলে রূপান্তরিত হলো। মাতাল শাকিল নিঝুম রাত পর্যন্ত মদের গ্লাস নিয়ে গাইতো- ‘পৃথিবীর কাছে নেই কোন দাবি’…। যদিও মৌসুমী লজ্জা পাচ্ছিল। কিন্ত বেপরোয়া শাকিল বেশ্যালয়ের সর্দারনীকে মোটা অংকের টাকা ঘুষ দিয়ে মৌসুমী কে নোংরা অন্ধকার গলি থেকে আলোর পথে নিয়ে এলো। অবশেষে কাজীর অফিসে দিয়ে (জায়া ও পতি) দম্পত্তিতে পরিণত হলো। তবুও ভাগ্যের লিখন, বদলায় কে! তাদের জীবনেও সুখ এলোনা। চলবে.. (তৃতীয় পর্ব আগামীকাল) [একটি হৃদয় বিদারক প্রেমের গল্প]
শাফায়েত জামিল রাজীব
প্রধান সম্পাদক, একুশে টাইমস্