বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৭:১৫ অপরাহ্ন

লোভের পরিণতি খুবই ভয়াবহ

লোভের পরিণতি খুবই ভয়াবহ

 

রেদোওয়ানুল হক:  লোভ এমন একটি পাপ যার দ্বারা মানুষ ধ্বংসের দিকে নিপতিত হয়। তাই বলা হয়ে থাকে যে লোভে পাপ পাপে মৃত্যু। আসলে লোভীরা শুধু নিজের ধ্বংসই টেনে আনে না বরং গোটা জাতিকেই ধ্বংসের দিকে নিমজ্জিত করে। লোভে পড়েই মানুষ ঘুষ খায়, দুর্নীতি করে, চুরি-ডাকাতি করে। প্রয়োজনে তারা খুনখারাবিও করে। অন্যকে মারে আবার নিজেও মরে। আর এজন্যই যারা আরো চাই আরো চাই করে তারা নানা ধরনের অপরাধে লিপ্ত হয়ে যায়। তারা এটা ভুলে যায় যে ধন-সম্পদ বা টাকা-পয়সা কোন কিছুই তাকে এই দুনিয়াতে চিরস্থায়ী করতে পারবে না। যারা লোভ-লালসার  পিছনে পড়ে আখেরাতকে ভুলে যায় তাদের সম্পর্কে মহান আল্লাহ তা’আলা কোরানে বলেন ১.আধিক্য বা প্রাচুর্যের লালসা তোমাদেরকে ভুলিয়ে রাখে। ২. এমনকি তোমরা কবর পর্যন্ত চলে যাও। ৩. আধিক্যের মধ্যে কল্যাণ এমন ধারণা কখনোই সঠিক নয়। শীঘ্রই তোমরা তা জানতে পারবে। ৪. আবারো বলছি আধিক্যের মধ্যে কল্যাণ এমন ধারণা কখনোই সঠিক নয়। ৫. তোমাদের এরূপ বিশ্বাস কখনোই সঠিক নয়। বরং তোমরা যদি সঠিক জ্ঞানের ভিত্তিতে এর পরিণাম সম্পর্কে জানতে ; তবে তোমরা ভুলে থাকতে না। ৬. তোমরা অবশ্যই জাহান্নাম দেখতে পাবে। ৭. অতঃপর তোমরা অবশ্যই তা নিজ চোখে দেখতে পাবে। ৮. অতঃপর আল্লাহ তাআলার অগণিত নেয়ামত সম্পর্কে তোমাদের জিজ্ঞাসা করা হবে। (সূরা আত তাকাসুর) আমরা তো দুনিয়াতে কতো নেয়ামত পাচ্ছি কিন্তু সেই নেয়ামতের শুকরিয়া স্বরূপ আমরা এমন কী আমল করছি? দুনিয়াতে আমরা শুধু পেলাম না পেলাম না করি। কিন্তু আল্লাহর কত নিয়ামত যে আমরা পেলাম সেই চিন্তা কখনোই করি না। একটু ভাবুন তো আল্লাহ তা’আলা আমাদের বাঁচার জন্য এমন কোন জিনিসটি দেননি। যেই বাতাস বা অক্সিজেন, আমরা বিনা মূল্যে পাচ্ছি অথবা হাত, পা, চোখ, নাক, কান, ইত্যাদি অগণিত অঙ্গ দ্বারা তিনি আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছেন, তা কি আমরা কোটি কোটি টাকা দিয়ে কিনতে পারতাম? ভেবে দেখুন আল্লাহ যদি একটি মুহূর্তের জন্য তার একটি নেয়ামতকে আমাদের থেকে ছিনিয়ে নেন তবে কি আমরা বেঁচে থাকতে পারবো? এজন্য যা যা পেয়েছি সবসময় তার শুকরিয়া আদায় করা উচিত। কারণ মানুষের চাহিদা কখনোই শেষ হয়না তাই সীমাহীন চাহিদা না করে আখিরাতের  জবাবদিহিতার ভয় করতে হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন বনি আদম সন্তানের যদি স্বর্ণে পরিপূর্ণ একটি উপত্যকা থাকে তবে সে তাতেও সন্তুষ্ট হবে না বরং সে দুটি উপত্যকা কামনা করবে। কারণ তার মুখ তো কবরের মাটি ব্যতীত অন্য কোন কিছু দিয়ে ভর্তি করা সম্ভব নয়। বস্তুত যে আল্লাহর দিকে ফিরে আসে (তওবা করে) আল্লাহ তা’আলা তার দোয়া কবুল করে নেন। (বুখারী ও মুসলিম) । কিছু লোক ভাবেন আল্লাহ যদি এত শাস্তিই দিবেন তবে কাফের ও মুশরিকরা এত উন্নতি কিভাবে করে। তাদের জন্য নিম্নের আয়াতটি উল্লেখ্য : ‘যারা আল্লাহ ও তাঁর বিধানকে অবিশ্বাস করে তারা যেন এটা মনে না করে যে আমি তাদের পাকড়াও না করে যে অবকাশ দিচ্ছি তা তাদের জন্য কল্যাণকর। আসলে আমিতো তাদেরকে অবকাশ দিচ্ছি যাতে তাদের পাপ বৃদ্ধি পায়। (অবশেষে) তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি।’ (সূরা আলে ইমরান ১৭৮ )। আল্লাহ্‌ তা’আলা আমাদেরকে দুনিয়াতে অবৈধ লোভ লালসা থেকে বিরত থাকার তৌফিক দান করুক আমীন।

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana