শুক্রবার, ০৯ Jun ২০২৩, ০১:০৭ অপরাহ্ন

টগবগে ফুটন্ত তেলে কবজি ডুবিয়ে ডাল পুড়ি ভেজে নজর কেড়েছেন লিয়াকত

টগবগে ফুটন্ত তেলে কবজি ডুবিয়ে ডাল পুড়ি ভেজে নজর কেড়েছেন লিয়াকত

আতাউল হাসান দিনার:

অবিশ্বাস্য হলেও সত্য টগবগে ফুটন্ত তেলে হাতের কবজি ডুবিয়ে ডালপুরি ভেজে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ক্রেতা-বিক্রেতা ও দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছেন লিয়াকত আলী। ৪০ বছর ধরে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের তারাকান্দি বাজারে সকাল থেকে রাত ৮টা পুর্যন্ত ডালপুরি বিক্রি কররেছন লিয়াকত। শুধু তাই নয় জীবন সংসারকেও সাজিয়েছেন তিনি মনের মতো করে। এমন সাফল্যের প্রশংসার জন্য এলাকায় তিনি এক আলোচিত নাম ডালপুরি লিয়াকত আলী হিসেবেই পরিচিত এক দরিদ্র পরিবারের সন্তান লিয়াকত আলী।
জানাযায়, প্রায় ৪০ বছর আগে অভাব অনটনে কেটেছে লিয়াকত আলীর শৈশব। তাই অভাবের সংসারে হাল ধরতে বেছে নিয়েছিলেন বাড়ির পাশে তারাকান্দি নামের একটি বাজারে সরকারি জমিতে দু’চালা টিনের নিচে ডালপুরি বিক্রির ব্যবসা। এসব মুখরোচক খাবার তৈরিতে তার হাতের অলৌকিক স্পর্শ যেন জেলার অন্য যে কোন ব্যবসায়ী থেকে তাকে সবসমই আলাদা করে রেখেছে। তার এ অসাধ্য কাজ দেখতে দুর-দুরান্ত থেকে দেখতে আসে অনেকে।
গত বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার তারাকান্দি বাজারে লিয়াকত আলী মিয়ার ডালপুরি দোকান সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশে তৈরি হয় ডালের বড়া। যা প্রতি কেজি ১৪০ টাকা। তিনি প্রতিদিন ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা বিক্রি করেন। এসব ডালপুরি খেতে ও ফুটন্ত কড়াই ভর্তি তেলে হাতনাড়ানোর এসব দৃশ্য দেখতে আসা বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের ভিড়।
এ ব্যপারে ক্রেতা ইলিয়াস বলেন, লিয়াকত আলী চাচার এই দৃশ্য দেখতে দুর-দুরান্ত থেকে প্রতিদিন এখানে অনেক মানুষের সমাগম হয়। হাত ডুবিয়ে ডালপুরি ভাজা একটি অবাক কান্ড।
ডা: আজহার নামের একজন ক্রেতা বলেন, আমি নিয়মিত এখানে ডালপুরি খেতে আসি। উনি হাতে তেল ধরতে পারে এটাও দেখি পাশা পাশি ওনার হাতে তৈরী ডাল পুড়ি অনেক মজা হয়। তিনি শূন্য থেকে ডাল পুরি বিক্রি করে আজ তিনি অনেক সম্পদের মালিক। ছেলে মেয়েদেরকেও উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন।
সরেজমিনে ব্যবসায়ী লিয়াকত আলী মিয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, বিগত ৪০ বছর ধরে এ ব্যবসায় করে আসছি। ফুটন্ত তেলে হাত দিয়ে আমি ডালপুড়ি ভাজি। এতে আমার হাতের কোন ক্ষতি হয় না। অনেক অভাবি ছিলাম। এ ব্যবসা করে আজ ছেলে-মেয়েকে পড়ালেখা শিখিয়েছি। আল্লার রহমতে এখন আমার কোন অভাব নেই।
এভাবেই ডালপুরি বিক্রির ব্যবসা করে তিনি সহায়-সম্পদ গড়ে তোলার পাশাপাশি ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া করিয়ে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলেছেন। কিন্তু সংসারে আশাতীত সচ্ছলতা ফিরলেও জীবন সায়াহ্নে দাঁড়িয়েও জীবনের গল্পকে পাল্টে দেয়ার ব্যবসাকেই আঁকড়ে ধরে রেখেছেন তিনি। এখন এলাকাবাসীর কাছে ডালপুরি লিয়াকত আলী হিসেবে তিনি পরিচিত।

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana