শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০২:০৪ অপরাহ্ন

কিশোরগঞ্জের কৃষক বিদ্রোহ (১৯৩০)

কিশোরগঞ্জের কৃষক বিদ্রোহ (১৯৩০)

কমরেড মুজাফফর আহম্মেদ, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, কমরেড ধরনী গোস্বামী প্রমুখ স্বদেশপ্রেমে প্রনোদিত হয়ে ১৯২৮ সালে ‘ওয়ার্কাস এন্ড প্রেজেন্টস’ পার্টির নামে এক বামপন্থি আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনৈতিক সংগঠন তৈরী করে। তারই ধারাবাহিকতায় ও ভাবাদর্শ ধারণ করে সারাদেশের মত ময়মনসিংহ জেলার কিশোরগঞ্জ মহাকুমায় ‘ইয়ং কমরেডস লীগ’ দেশপ্রেম আদর্শ অনুপ্রাণিত হয়ে তীব্র কৃষক আন্দোলন গড়ে তোলে। নেতৃত্বে ছিলেন নগেন সরকার, ওয়ালিনেওয়াজ খান, সুধাংশু অধিকারী, মনীন্দ্র চক্রবর্তী প্রমুখ। এদের নেতৃত্বে জমিদার, বড় তাল্লুকদার ও মহাজনদের জুলুমের বিরুদ্ধে ১৯৩০ সালের মে-জুন মাসে এক তীব্র কৃষক আন্দোলন গড়ে তোলে।
আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল কিশোরগঞ্জের ১০মাইল দূরে এক গ্রামে এক অত্যাচারী মুসলমান মহাজনের বাড়ির উপর হিন্দু-মুসলমান কৃষকের মিলিত অভিযান দিয়ে। তাঁরা তার কাছারি বাড়ি তছনছ করে, জ্বালিয়ে দেয় সব বন্ধকী দলিল। কিশোরগঞ্জ মহকুমার জাঙ্গালিয়া, হোসেনপুর, মঠখোলা, গোবিন্দপুর প্রভৃতি গ্রামে দেখতে দেখতে এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে সব চেয়ে উল্ল্যেখযোগ্য বিষয়টি হলো জাঙ্গালিয়া গ্রামের প্রবল অত্যাচারী মহাজন, কৃষ্ণ রায়-সংক্রান্ত ঘটনাটি। সেখানে কৃষ্ণ রায়ের বাড়ির সামনে হিন্দু মুসলমান কৃষকেরা দাবি করে সমস্ত ঋণপত্র ও বন্ধকী দলিল তাদের হাতে তুলে দিতে হবে। জবাবে কৃষ্ণ রায় ও তার কর্মচারীরা জনতার উপরে নির্বিচার গুলি চালায়। তাতে ৮জন কৃষক নিহত ও বহু কৃষক আহত হন। এরপর জনতা ক্ষেপে গিয়ে দরজা ভেঙ্গে বাড়িতে ঢুকে জিনিসপত্র তছনছ ও কৃষ্ণ রায়কে হত্যা করে এবং সমস্ত বন্ধকী ঋণপত্র জ্বালিয়ে দেয়।
ইংরেজ সরকার ও মৌলবাদী পত্রিকাগুলি জোর প্রচার চালায় যে, ঐ হাঙ্গামা সাম্প্রদায়িক এবং কঠোরহস্তে এটা দমন করা দরকার। একমাত্র কমিউনিস্টরা ও শেরে বাংলা এ.কে ফলুল হকের সংগঠন ‘নিখিল বঙ্গ প্রজা সমিতি’ দৃঢ়ভাবে ঐ গণজাগরণকে সমর্থন করে। ফলে ইংরেজ সরকার প্রজা সমিতির বেশ কয়েকটি জেলা সংগঠনকে বে-আইনী ঘোষণা করে।

 

শাফায়েত জামিল রাজীব
প্রধান সম্পাদক
একুশে টাইমস্ বিডিডটকম

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana