ইসরাইলি হামলা থেকে বাঁচতে এরই মধ্যে রাফা থেকে অন্যত্র সরে গেছেন ১০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি। এমন পরিস্থিতিতে সেখানে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম বন্ধের কথা জানিয়েছে জতিসংঘের ফিলিস্তিনবিষয়ক শরণার্থী সংস্থা। তাছাড়া অবরুদ্ধ গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি হামলায় প্রায় ৬০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এদিকে গাজার ৩২ ভাগ এলাকা দখলে নিয়েছে ইসরাইল।
রোববার দেওয়া গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবরের পর ইসরাইলি হামলায় ৩৬ হাজার ৪৩৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৮২ হাজার ৪০৭ জন। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। গাজায় আগের ২৪ ঘণ্টায় হত্যার শিকার হয়েছেন ৬০ ফিলিস্তিনি।
এদিকে বিরাট এলাকাজুড়ে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের তাঁবু, আর সেগুলো দিয়ে লেখা একটি স্লোগান ‘অল আয়েস অন রাফা’ বা ‘সব চোখ রাফার দিকে’। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি এই ছবিটি কয়েক দিন ধরে ব্যাপকভাবে শেয়ার হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ছবিটি প্রথমবার শেয়ার হয়েছিল মালয়েশিয়া থেকে। এরপর দ্রুতই প্রায় সাড়ে চার কোটি ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী তা শেয়ার করেন, যাদের মধ্যে ভারত, পাকিস্তান, মধ্যপ্রাচ্যের বহু তারকাও রয়েছেন।
গাজার ৩২ ভাগ দখল করেছে ইসরাইল : গাজা উপত্যকার ৩২ ভাগ ইসরাইল দখল করে নিয়েছে বলে আলজাজিরা এক তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। আলজাজিরার সানাদ ভেরিফিকেশন এজেন্সি অনুসারে, একটি বাফার জোন ও একটি কেন্দ্রীয় অক্ষ তৈরি করার জন্য ইসরাইল ‘পরিকল্পিতভাবে প্রতিবেশী এলাকাগুলো ধ্বংস করে’ গাজার প্রায় ৩২ শতাংশ এলাকা দখল করেছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ৩২ শতাংশের ভেতরে মিসরের সীমান্তে ফিলাডেলফি করিডোরের এলাকা অন্তর্ভুক্ত নয়; যে এলাকাটি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বলে ইসরাইল বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছে। এলাকাগুলো দ্রুততার সঙ্গে বিমান হামলা, কামান হামলা ও বুলডোজারের মাধ্যমে সম্পূর্ণ ধ্বংস করার পর ধীরে ধীরে ইসরাইল সেটি দখলে নিয়েছে।
এদিকে গাজায় জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল ও জরুরি ত্রাণ সমন্বয়কারী মার্টিন গ্রিফিথস বলেছেন, ‘গাজায় কোনো নিরাপদ স্থান নেই’ এবং মর্যাদাপূর্ণ মানব জীবন সেখানে ‘প্রায় অসম্ভব’। তিনি আরও বলেছেন, ‘এমনকি মানুষ বাড়ি ফিরতে পারলেও, অনেকের আর যাওয়ার জায়গা নেই।’
জাতিসংঘের হিসেবে, গাজার জনসংখ্যার প্রায় ৮৫ শতাংশ বা ১ দশমিক ৯ মিলিয়ন মানুষ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এদের মধ্যে অর্ধেক শুধু চলতি মাসেই বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
১৯৪৮ সালে নাকবার সময়, ইসরাইল রাষ্ট্র গঠনের পথ তৈরি করার জন্য জায়নবাদী গ্যাং দ্বারা প্রায় ৭ লাখ ফিলিস্তিনিকে তাদের বাড়িঘর এবং গ্রাম থেকে বিতাড়িত করা হয়েছিল।