শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:২৮ পূর্বাহ্ন
সময়ের তাগিদে, পুরানথানা নিবাসী ডা: এ.কে. শরফুদ্দিন আহম্মদ (বাদশা মিয়া) স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে ’৩৮ সালে কিশোরগঞ্জ মহকুমা প্রশাসক মিষ্টার সি.এ. নরোনার দ্বারস্থ হন এবং ইসলামীয়া বোডিং এর খোলা জমিতে মসজিদ নির্মাণের উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবগত করেন। আইন ও প্রথা অনুযায়ী, ইংরেজ মহকুমা প্রশাসকের মাধ্যমে কলকাতার কলেক্টর সাহেবের নিকট থেকে মসজিদ নির্মাণের অনুমতি লাভ করে। তখন টিন দিয়ে ছোট আকারে মসজিদ নির্মাণ করা হয়। ধীরে ধীরে মুসল্লী বৃদ্ধি পাওয়ায় মসজিদের ইমাম ও বিশিষ্ট আলেম মাওলানা আতাহার আলী সাহেব ’৪৩ সনে মসজিদটির পূর্ণ সংস্কার করেন। সেই প্রেক্ষাপটে হিন্দুরা দুর্গাপূজার মুর্তি নিয়ে এবং ঢাক-ঢোল ও অন্যান্য বাজনা-বাঁজিয়ে মসজিদের সামনে দিয়ে মিছিল নিয়ে যেত। কিন্তু এবার মুসল্লীরা সিদ্ধান্ত নেয়, মসজিদের সামনে দিয়ে মুর্তির মিছিল নেয়া যাবে; তবে কোন ঢাক-ঢোল ও বাঁজনা বাঁজানো যাবে না। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত শুনে হিন্দু সম্প্রদায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলেন। আগত পূজাকে কেন্দ্র করে হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রদায়িক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেতে লাগল। ঘটনার ভয়াবহতা আঁচ করতে পেরে, বৃটিশ সরকার মসজিদের সামনে গোর্খা রেজিমেন্টের নেপালী সৈন্য নিয়োগ করে। অত:পর নির্দিষ্ট দিনক্ষণ এল। ২৪অক্টোবরের রাত্র ৮টার দিকে হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায় নিজনিজ অবস্থান থেকে মারমুখী আচরণ শুরু করল। তথাপি গোর্খার রেজিমেন্টের সৈন্যরা এক তরফাভাবে মুসল্লীদের উপর গুলি করে। গুলিতে তখনই দুই জন মারা যায়। আরো তিনজন হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু বরণ করেন। অত:পর এমন ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আত্মত্যাগের সম্মানার্থে ও স্মরণার্থে মসজিদটির নামকরণ করা হয় ‘শহীদী মসজিদ।’
শাফায়েত জামিল রাজীব
সম্পাদক
একুশে টাইমস্