একুশে ডেস্ক :
দেশের বেসরকারি খাতে নেওয়া বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে এখন সবচেয়ে বড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে ঋণের চড়া সুদহার ও ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার। গত পৌনে দুই বছরে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমেছে ৩০ শতাংশ। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা ৪২ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। ফলে ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে বাড়তি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুদ হার গড়ে সোয়া শতাংশ থেকে বেড়ে প্রায় সাড়ে ৮ শতাংশের কাছাকাছি চলে গেছে। এতে পরিশোধ করতে হচ্ছে বাড়তি সুদ। সার্বিকভাবে বৈদেশিক ঋণের বিপরীতে বাড়তি অর্থ পরিশোধ করতে হচ্ছে। এতে উদ্যোক্তারা যেমন চাপে পড়েছেন, তেমনি দেশের বৈদেশিক ঋণের দায়ও বেড়ে যাচ্ছে। তবে আগের ঋণ পরিশোধ ও নতুন ঋণ গ্রহণ কমিয়ে দেওয়ায় বেসরকারি খাতে বৈদেশিক ঋণের স্থিতি কমেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে বেসরকারি খাতে বৈদেশিক ঋণের স্থিতি ছিল ২ হাজার ১০০ কোটি ডলার। এর মধ্যে স্বল্পমেয়াদি ঋণ ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলার ও দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ ৮৫০ কোটি ডলার। এর ৮০ শতাংশের বিপরীতেই সুদ হার বাজারভিত্তিক। অর্থাৎ ঋণ পরিশোধের সময় যে সুদ হার বহাল থাকবে ওই হারে সুদ পরিশোধ করতে হবে। একই সঙ্গে বিনিময় হারও পরিশোধের সময় যা থাকবে, ওই দরেই ঋণ শোধ করতে হবে। এ কারণে ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদি ঋণ নেওয়া হয়েছে ৪ থেকে ১০ বছর আগে। ওই সময়ে ঋণের বিপরীতে ডলার দিয়ে কম টাকা পেলেও এখন বেশি টাকা দিয়ে ডলার কিনে তা পরিশোধ করতে হচ্ছে। স্বল্পমেয়াদি ঋণ নেওয়া হয় সাধারণত চার থেকে ছয় মাস মেয়াদে। দুই পক্ষ সমঝোতার ভিত্তিতে এর মেয়াদ বাড়াতে পারে। তবে এতে বাড়তি সুদ দিতে হয়। করোনা ও বৈশ্বিক মন্দার কারণে বাংলাদেশ বিশেষ করে বেসরকারি খাতের স্বল্পমেয়াদি ঋণ পরিশোধের মেয়াদ কয়েক দফায় বাড়িয়েছে।