মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:৪৭ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, একুশে ডেস্ক: ব্রহ্মপুত্র নদের পূর্বতীরের এক সমৃদ্ধ জনপদের নাম ‘কিশোরগঞ্জ’। এই শহরটি আমার জন্মভূমি এবং প্রিয়, আবেগিয় স্থান। এই শহরের সুনির্মল বাতাস, আলোকরশ্মি, নদী, প্রকৃতি, বৃক্ষরাজি প্রভৃতি ঘিরে আমার শৈশব থেকে যুবক বয়সে পদার্পন। কিশোরগঞ্জ শহরকে কেন্দ্রকরে আমার বেড়ে ওঠা, হাসি-কান্না, মায়া-মমতা বিকশিত ও পল্লবিত হয়েছে। কিন্ত আজকের কিশোরগঞ্জ শহরের অসহনীয় যানজট আর প্রিয় নরসুন্দা নদীর হতশ্রী অবস্থা আমাকে ব্যাথিত করে তুলে।
উল্লেখ্য যে, ইতিহাসবিদদের মতে বত্রিশ প্রামানিক জমিদার বাড়ীর বড় কর্তা কৃষ্ণদাস প্রামানিকের জ্যৈষ্ঠ ছেলে নন্দ কিশোর প্রামানিকের উদ্যোগে নরসুন্দা নদীর তীরে হাট-বাজার বা গঞ্জ প্রতিষ্ঠিত হয়। তাই নন্দ কিশোরের ‘কিশোর’ নামের সঙ্গে ‘গঞ্জ’ যোগ হয়ে কিশোরগঞ্জ নামকরণ করা হয়েছে।
ধার্মিক নন্দ কিশোর প্রামানিক পৈতৃক জমিদারির ষোলআনা সম্পত্তির মধ্যে পৌঁনে চার আনা অংশ নিয়ে রথখলায় রাধাঁনাথের বিগ্রহ স্থাপন করেন। এবং নি:সন্তান নন্দকিশোর প্রামানিক দত্তকপুত্র পিয়ারি মোহন রায়কে উল্লেখিত দেবোত্তর সম্পত্তির সেবায়েত নিযুক্ত করেন। অত:পর পিয়ারি মোহন রায়ও ছিলেন নি:সন্তান। এমতবস্থায় উনি বিরাজ মোহন রায়কে ‘পৌঁনে চার আনা বাড়ি’র সেবায়েত মনোনীত করেন। বর্তমানে বিরাজ মোহন রায়ের পরবর্তী বংশধরগণই এই সম্পত্তির ভোগ দখলে আছে। কিন্তু ইতিহাসের পরিক্রমায়, কালের বিবর্তনে, সময় ও ¯্রােতের সাথে তাল মিলিয়ে- দেবোত্তর সম্পত্তিটি ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসেবে এক হাত থেকে অন্য হাতে যাচ্ছে। দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যবাহী জমিদার বাড়িটি হারিয়েছে তার অতীত ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি।