রবিবার, ২২ Jun ২০২৫, ০৫:০৬ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার:
শরতের কাশফুল, ঢাকের বাদ্য আর প্রতিমা তৈরিতে কারিগরদের ব্যস্ততা জানান দিচ্ছে দেবী দুর্গার আগমনী বার্তা। আগামী ২০ অক্টোবর সারাদেশের ন্যায় কিশোরগঞ্জেও মহাষষ্ঠির মধ্য দিয়ে শুরু হবে সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। ২৪ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে এর সমাপ্তি ঘটবে। এবার দেবী আসবেন এবং ফিরে যাবেন ঘোড়ায় চড়ে।
এ বছর জেলায় ৪১০টি পূজা মন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। পূজোর আর মাত্র কয়েকদিন বাকী। তাই উপজেলার বিভিন্ন পূজা মন্ডপে দিনরাত প্রতিমা তৈরী ও নানান রঙ-তুলির আঁচরে শিল্পীর নিপুণ হাতের ছোয়ায় প্রতিমাকে সাজানো হচ্ছে অপরূপ রূপে। ঘুম নেই প্রতিমা শিল্পীদের। দিনরাত রঙের আঁচড় আর মনের মাধুরী মিশিয়ে প্রতিমা সাজাতে ব্যস্ত তারা। সেই সাথে চলছে পূজা মন্ডপগুলোতে সাজসজ্জার কাজ।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় ৬২টি, করিমগঞ্জে ১৮টি, পাকুন্দিয়ায় ১৮টি, হোসেনপুরে ১৪টি, কটিয়াদী ৩৯টি, বাজিতপুরে ৬১টি, কুলিয়ারচলে ৩৫টি, ভৈরবে ২৪টি, ইটনায় ৩৭টি, মিঠামইনে ২০টি, অষ্টগ্রামে ৪৬টি, নিকলীতে ১৯টি, তাড়াইলে ১৭টি পূজা মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ১১টি ব্যক্তি উদ্যোগে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর পূজা সামনে রেখে কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন নাটক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতি বছরের মতো যথারীতি হবে আরতি প্রতিযোগিতা।
অপরদিকে দুর্গোৎসব উপলক্ষে পরিবার পরিজনের জন্য কেনা-কাটায় ব্যস্ত সময় পাড় করছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। ঘরে বাইরে পূজাকে ঘিরে চলছে ব্যস্ততা। জামা কাপড় তৈরী, কেনা-কাটায় সরগরম জেলার বিভিন্ন উপজেলার পৌরশহরসহ আশপাশের বাজারে। শারদীয় দুর্গা উৎসবকে কেন্দ্র করে চারপাশে চলছে এখন উৎসবের আমেজ।
প্রতিমা তৈরির কারিগর শ্যামল পাল জানান, এক একটি মণ্ডপে চার-পাঁচজন কারিগর মিলে প্রতিমা তৈরির কাজ করছে। পঞ্চমীর রাতের আগেই প্রতিমার সব কাজ শেষ করতে হবে। তাই রাত জেগে কাজ করতে হয় তাদের।
তারা আরো জানান, বংশ পরস্পরায় এ পেশায় জড়িত আছেন তারা। বাপ দাদার কাছ থেকে শেখা কাঁদা-মাটি আর খড় দিয়ে কিভাবে প্রতিমা তৈরী করতে হয়। বছরের এই সময়ে কাজের চাপ বেশি। এক সেট প্রতিমা তৈরি করতে তাদের সময় লাগে ১ সপ্তাহ থেকে ২ সপ্তাহ। তবে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধিতে মজুরি নিয়ে অসন্তোষ জানান তারা।
কিশোরগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন বলেন, এবার উপজেলায় ৪১০টি মন্ডপে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। গত বছরের তুলনায় এবার পূজা আরো জাঁকঝমকপূর্ণ হবে। এ জন্য মন্দিরের বিভিন্ন সাজসজ্জার কাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানান, আসন্ন দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে আইন শৃংখলা রক্ষায় আনসার-ভিডিপি, পুলিশের পাশাপাশি র্যাবের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। তাছাড়াও এ উপলক্ষ্যে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।