শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:০৩ পূর্বাহ্ন
শহীদুল্লাহ কায়সার একাধারে সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদ ছিলেন । পৈতৃক বাড়ি ছিল ফেনী জেলায়। তাঁর আর একটি পরিচয় হলো উনি সাবেক সাংসদ পান্না কায়সারের স্বামী এবং জননন্দিত টিভি অভিনেত্রী। সমীকায় সারের পিতা। একটি তবে শৈশব, কিশোরকালসহ উনার ছাত্রজীবন কাটে কলকাতায়। কারণ বৃটিশ আমলে উনার পিতা মাওলানা হাবিবুল্লাহ কলকাতা মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ছিলেন। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর শহীদুল্লাহ কায়সারের পিতা ঢাকার আলীয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল পদে আসীন হন। তথাপি মেধাবী ছাত্র শহীদুল্লাহ কলকাতার প্রেসিডেন্সি থেকে অর্থনীতিতে কৃতিত্বের সাথে অনার্স ডিগ্রী লাভ করেন। কিন্তু পরবর্তীকালে ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ে এম.এ ক্লাশে ভর্তি হয়েও ডিগ্রী অর্জন করতে পারেনি। কারণ মার্কস-লেলিনবাদে বিশ্বাসী এই ভাষা সৈনিক একজন দক্ষ সংগঠক হিসেবে ১৯৫২ তে কারা ভোগ করেন। অত:পর দীর্ঘ চার বছর ৫২-৫৬ পর্যন্ত উনি জেলে ছিলেন। কমিউনিষ্ট আন্দোলনে যুক্ত থাকার কারণে ১৯৫৮ সালে বিয়ের আসর থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পাত্রী ছিল কলকাতা নিবাসী এক বনেদী বংশের মেয়ে হালিমা খাতুন। তখন শহীদুল্লাহ পরিস্থিতি বুঝতে পেরে, হালিমা খাতুনকে জেল গেটে ডিভোর্স প্রদান করেন এবং হৃদয়ের সাথে যুদ্ধ করে প্রেমময় নারী হালিমা খাতুন অন্যত্র বিয়ে করে সংসারী হওয়ার উপদেশ দেন। আইয়ুব শাহীর বিরোধিতা এবং কমিউনিষ্ঠ ধ্যান ধারনার জন্য শহীদুল্লাহকে আইয়ুব খান ১৯৬২ তে সামারিক আইনে দুই বছর ছয় মাস কারাগারে অন্তরীন রাখেন। তখন জেলে বসে শহীদুল্লাহ কায়সার রচনা করে কালজয়ী উপন্যাস সংশপ্তক করেন। অচিরেই কালজয়ী উপন্যাসটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এম.এ ক্লাশের বাংলা বিভাগ পাঠ্য বই হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে। আবার উপন্যাসের নাট্যরূপে টি.ভি.তে দেখানে শুরু হয়। তাই জেল থেকে মুক্তি পেয়ে শহীদুল্লাহ কায়সার বলেছিলেন; আয়ুবের কারাগার আমাকে সাহিত্যিক বানিয়ে দিল।
চলবে….
-সম্পাদক
একশে টাইমস্