সফলতা সব মানুষের জীবনেই পরম আরাধ্য। সময়ের পালাবদলে মানুষ অনেক সাফল্য নিজের ঝুড়িতে তোলে। কেউ পার্থিব জীবনের সাফল্যকে গুরুত্ব দেয় আবার কেউ গুরুত্ব দেয় পরকালীন সাফল্যকে। কেউ সম্পদের পাহাড় গড়ে নিজেকে সফলভাবে আবার কেউ নামাজ-রোজা ও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পেরে নিজেকে সফল মনে করে। সাধারণত সফলতা বলতে আমরা বুঝি গরিব থেকে ধনী হওয়া, কুঁড়েঘর থেকে উঁচু দালান তোলা, নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসে সম্পদের পাহাড় গড়া, রিকশাচালকের ছেলে হয়েও বড় ব্যবসায়ী হওয়া, কষ্ট করে পড়াশোনা করার পাশাপাশি চাকরি করা ইত্যাদি। দুনিয়ায় প্রচলিত যেসব কাজকর্ম আছে, এসব কাজকর্মে টিকে থাকার নামই হচ্ছে বর্তমান সময়ের সফলতা এবং অনেকে এটাকেই আসল সফলতা হিসেবে মেনে নিচ্ছি। ক্ষণস্থায়ী জীবনের এই সফলতার ভাবনায় যারা মোহগ্রস্ত, তাদের উদ্দেশে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘পার্থিব দুনিয়ার চাকচিক্যের প্রতি অনুরাগ মানুষকে ক্ষীণদৃষ্টিসম্পন্ন করে ফেলে। এ কারণে পরকাল সম্পর্কে জানা তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। তারা শুধু দুনিয়ার জ্ঞানেই জ্ঞানী।’ (সুরা রুম : ৭)
আসলে মুসলিম নর-নারীর সবচেয়ে বড় সফলতা ও সফলতার মানদ- হচ্ছে মহান আল্লাহ তায়ালার ভয় অর্জন করা এবং রাসুলের (সা.) আদর্শে আদর্শবান হওয়া। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘যারা আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর তাকওয়া অবলম্বন করে, তারাই প্রকৃত সফলকাম’ (সুরা নূর : ৫২)। একজন মুমিন ব্যক্তি সফলতা অর্জন করে নামাজের মাধ্যমে। আল্লাহ বলেন, ‘অবশ্যই মুমিনরা সফল হয়েছে, যারা নিজদের নামাজে বিনয়াবনত, যারা অনর্থক কথাকর্ম থেকে বিমুখ, যারা জাকাতের ক্ষেত্রে স্বক্রীয়, যারা নিজদের লজ্জাস্থানের হেফাজতকারী; তবে তাদের স্ত্রী ও তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে তারা ছাড়া, নিশ্চয় এতে তারা নিন্দিত হবে না, অতঃপর যারা এদের ছাড়া অন্যকে কামনা করে তারাই সীমালঙ্ঘনকারী, আরও যারা নিজেদের আমানতসমূহ ও অঙ্গীকারে যত্নবান, যারা নিজেদের নামাজের হেফাজত করে; তারাই হবে ওয়ারিশ, জান্নাতুল ফিরদাউসের ওয়ারিশ, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে।’ (সুরা মুমিনুন : ১-১১)