মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:১৫ পূর্বাহ্ন

ঋতুবতী নারী সম্পর্কে ভুল ধারণা

ঋতুবতী নারী সম্পর্কে ভুল ধারণা

একুশে ডেস্ক:
নারীদের মাসিক পিরিয়ড বা হায়েজ প্রাকৃতিক ও স্বাভাবিক বিষয়। মহান আল্লাহ এতে রেখেছেন নানাবিধ কল্যাণ ও উপকার। ঋতুবতী নারী ইসলামের দৃষ্টিতে অপবিত্র নয়, বরং স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত যত্ন ও সম্মান লাভের অধিকারী। তবে ইসলামপূর্ব যুগে ইহুদিরা ঋতুবতী নারীদের সঙ্গে অত্যন্ত খারাপ আচরণ করত; তাদের ঘরের বাইরে ঘোড়ার আস্তাবলে রেখে দিত, ভালোমতো খাবার গ্রহণ করতে দিত না, সমাজের লোকেরা তাদের সঙ্গে এই সময়ে দেখা-সাক্ষাৎ বন্ধ রাখত। মক্কার মুশরিকরাও ঋতুবতী নারীদের অবজ্ঞার চোখে দেখত এবং আলাদা ঘরে রাখত। দুঃখজনকভাবে ইহুদি ও মুশরিকদের এ ধরনের মানসিকতা অজ্ঞ মুসলিমদের মধ্যেও দেখা যায়।
হজরত যুহাইর ইবনে হারব (রা.) বর্ণনা করেন, মক্কা-মদিনায় ঋতুবতী নারীদের সঙ্গে এমন আচরণ দেখে সাহাবিরা কী করবেন, আল্লাহর রাসুলের (সা.) কাছে জানতে চাইলে আল্লাহ তায়ালা এ আয়াত অবতীর্ণ করলে-‘তারা আপনার কাছে হায়েজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। আপনি বলে দিন, সেটা কষ্টকর মুহূর্ত। সুতরাং তোমরা হায়েজকালে যৌনমিলন করবে না, (পিরিয়ড শেষে গোসল করে) পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত। তারা যখন পবিত্র হবে তখন তাদের কাছে ঠিক সেভাবে গমন করবে যেভাবে আল্লাহ তোমাদের আদেশ দিয়েছেন’ (সুরা বাকারা : ২২২)। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘তোমরা সে সময় তাদের সঙ্গে শুধু সহবাস ছাড়া অন্যান্য সব কাজ করবে।’

এ খবর ইহুদিদের কাছে পৌঁছলে তারা বলল, ‘এ লোকটি সব কাজেই কেবল আমাদের বিরোধিতা করতে চায়’ (তাফসিরে ইবনে কাসির : ১/৬০৯)। ঋতুবতী নারীদের অপয়া-অস্পৃশ্য মনে করা মূলত ইহুদি সমাজের আচরণ। আল্লাহর রাসুল (সা.) তার স্ত্রীদের সঙ্গে ঋতুবতী অবস্থায় একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করতেন, একই বিছানায় একই চাদরে ঘুমাতেন, এক সঙ্গে গোসল করতেন, উভয়ে উভয়ের মাথা আঁচড়িয়ে দিতেন; বরং এ সময় তিনি স্ত্রীদের ঘরোয়া কাজে বেশি বেশি সহযোগিতা করতেন এবং মানসিকভাবে অতিরিক্ত সাপোর্ট দিতেন।
Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana