বৃহস্পতিবার, ১৯ Jun ২০২৫, ০৩:২০ পূর্বাহ্ন

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে গৃহ বধূ প্রীতিকে টাকা মওকুফের জন্যই হত্যা, হত্যাকারীদের ফাসিঁর দাবী

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে গৃহ বধূ প্রীতিকে টাকা মওকুফের জন্যই হত্যা, হত্যাকারীদের ফাসিঁর দাবী

এম এ হালিম,বার্তাসম্পাদকঃ  কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে ঋণের টাকা মওকুফের জন্য প্রীতি রানী সরকারকে হত্যা করা হয়েছে । পরে মরদেহ ফাসিঁতে ঝুলিয়ে আতœহত্যা বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে স্বামী ও শ্বশুড় বাড়ির লোকজন  এমন অভিযোগ করেছেন প্রীতির বাবা বিনোদ সরকার ও তার পরিবার। তিনি আরো জানান, তার মেয়েকে হত্যার আগে বেসরকারকারি উন্নয়ন সংস্থা এফএইচপি থেকে  প্রীতির নামে ,স্বামী মিঠুন সরকার মোটা অংকের ঋণ নিয়েছেন । তাছাড়া তার মা স্বরসতী রানীর নামে ও এফএইচপি থেকে ঋন নিয়ে ছিলেন । এছাড়া অন্য একটি  এনজিও সংস্থা থেকে মোটা অংকের ঋণ নিয়ে পরিশোধ করতে পারেনি মিঠুন । শুধু তাই নয় বিদেশ যাওয়ার নাম করে বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে অমানুষিক নির্যাতন চালাতো প্রীতির উপর । পরে নির্যাতন বন্ধে স্বামী কে কিছুদিন আগে ৫০ হাজার টাকা দেয় । তার পরে ও মেয়ের শেষ রক্ষা হয়নি । অবশেষে গত ২৭ শে মার্চ সন্ধ্যায় প্রীতিকে শারিরীক নির্যাতনে হত্যা করে স্বামী ও শ্বশুড় বাড়ির লোকজন । তাছাড়া ও বিয়ের সময় স্বামীকে  নগদ ২ লাখ টাকা  ও গয়নাগাটি দেয়ার পর ও  বিদেশে যেতে আরো  টাকা এনে দেয়ার জন্য প্রীতির উপর অমানুষিক নির্যাতন চালাতো ্ ।  আজ বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ইউনিয়ন ভৈরব শাখা কার্যালয়ে এসে সাংবাদিকদের  কাছে অভিযোগ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন প্রীতির বাবা বিনোদ সরকার । আর এভাবেই মেয়ের উপর অমানুষিক ঘটনার বর্ণণা দিতে গিয়ে বার বার কান্নায় ভেঙে পড়েন অসহায় এ বাবা । এ সময় তার স্ত্রী  বিপুলা রানী ও নিহতের দাদী ঊষা রানী ও দাদা সুনীল সরকারসহ স্বজনরা মিডিয়া ও প্রশাসন সহ প্রধান মন্ত্রীর কাছে বিচার দাবী করেন ।
 অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা এফএইচপি  কুলিয়ারচর শাখায় খোজঁ নিয়ে জানাযায় মৃত্যুর পূর্বে প্রীতির নামে  ২ লাখ টাকা ঋণ ছিলো । প্রীতির নামে নেওয়া ঋণ  প্রীতি মারা যাওয়ার পর সংস্থাটি মওকুফ করে দিয়েছে । তবে স্বাভাবিক মৃত্যু হলে ঋণ মওকুফের নিয়ম থাকলেও প্রীতির মৃত্যু স্বাভাবিক অবস্থায় হয়নি । পুলিশ বলছে এ ঘটনায় কুলিয়ারচর থানায় অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে । তাহলে কিভাবে ঋণ মওকুফ করা হলো ?
এ বিষয়ে এফএইচপি কুলিয়ারচর শাখা ব্যবস্থাপক মাসুদ মিয়া  জানান, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মৃত্যুর সনদ পেয়ে তারা ঋন মওকুফ করেছে ।
 নিহত প্রীতির পরিবার  আরো জানায় গত ২ বছর আগে ভৈরব রাম শংকর পুর গ্রামের বিনোদ সরকারের কন্যা, প্রীতি রানী সরকারকে পার্শ্ববতী কুলিয়ারচর রামদীর আগরপুরে গোপাল বিশ্বাসের পুত্র মিঠুন বিশ্বাসের সাথে সনাতন ধর্ম রীতি অনুযায়ী বিয়ে দেন । বিয়ের পর থেকে স্বামী ও শ্বশুড় বাড়ির লোকজন প্রীতিকে  বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়ার জন্য শারীরিক ভাবে নির্য়াতন করতো । অবশেষে গত ২৭ শে মার্চ সন্ধ্যায় প্রীতিকে শারিরীক নির্যাতনে হত্যা করে স্বামী ও শ্বশুড় বাড়ির লোকজন । হত্যাকে আত্মহত্যা বলে প্রচার করতে লাশ ঘরের  বারান্দার রুমে ধর্ণার সাথে ঝুলিয়ে দেয় । পরে রাত ৮ টার দিকে আমাদেরকে জানায় প্রীতি আতœহত্যা করেছে ।  কিন্ত প্রীতি আতœহত্যা করেনি  । তাকে মেরে ফেলা হয়েছে । কারন তার মুখে ও গলার নীচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে ।এ ঘটনায় কুলিয়ারচর থানায় হত্যা মামলা করতে গেলে পুলিশ আমাদের মামলা না নিয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করে ।
এ বিষয়ে নিহতের স্বামী মিঠুন বিশ্বাস কথা বলতে রাজি হয়নি ।
এ বিষয়ে নিহতের শ্বাশুড়ী স্বরসতী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, স্বামী -স্ত্রীর মাঝে ইফতারি নিয়ে জগড়া ও কথা কাটাকাটি হয় । পরে স্বামী তার কর্মস্থলে চলে যায় । আর আমি নাতি নিয়ে আমার রুমে চলে আসি । হঠাৎ করে প্রায় আধা ঘন্টা পরে দেখতে পায় প্রীতির ঘরের দরজা বন্ধ । পরে জানালা ভেঙে ঘরের ধর্ণার সাথে ঝুলানো ফাসিঁ থেকে তাকে উদ্বার করে ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে সে মারা যায় ।
এ বিষয়ে কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জানান, প্রীতি রানী সরকারের ঘটনায় প্রাথমিকভাবে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে । তবে ময়নাতদন্তে যদি হত্যা প্রমাণিত হয় । পরবর্তীতে হত্যা মামলা রুজু করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে ।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana