বৃহস্পতিবার, ১৯ Jun ২০২৫, ০৯:০৯ অপরাহ্ন
মোঃ মাইন উদ্দিন, কুলিয়ারচর প্রতিনিধি :
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে স্কুল ছাত্রীকে ইভটিজিং করায় বিচার পাওয়ার আশায় ইভটিজারদের অভিভাবকের কাছে বিচার দেওয়ায় আবুবকর (৫৭) নামে ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার করেছে।
এ ঘটনায় উত্তেজিত এলাকাবাসী হত্যাকারীদের তিনটি ঘরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে উপজেলার রামদী ইউনিয়নের মুজরাই মধ্যপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আবুবকর মুজরাই মধ্যপাড়া গ্রামের আব্দুস সোবহান এর পুত্র। নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন আগে একটি দূর্ঘটনায় আহত স্থানীয় বীর কাশিমনগর এফ.ইউ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোছা. হাসিনা বেগমকে মুজরাই মধ্যপাড়া গ্রামে একসাথে দেখতে যায় ওই বিদ্যালয়ের দুই ছাত্র ও দুই ছাত্রী। এ সময় রাস্তায় ছাত্রীদের অশ্লীল ভাষায় কথাবার্তা বলে ইভটিজিং করে ওই গ্রামের রবি মিয়ার পুত্র বাবুল ও আলমের পুত্র রিসাদ সহ কয়েকজন। এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা বিষয়টি তাদের মেডাম হাসিনা বেগমকে জানান। হাসিনা বেগম বিষয়টি আবুবকরের স্ত্রী আনিছা বেগমকে জানান। আনিছা বেগম বিষয়টি নিয়ে রিসাদ এর পিতা আলমের নিকট বিচার দেন।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বৃহস্পতিবার রাত ৮ টার দিকে আলমের পুত্র রিসাদ, সালামের পুত্র পারভেজ ও রবি মিয়ার পুত্র বাবুলসহ আরো কয়েকজন নিয়ে কৃষক আবুবকরের বাড়িতে গিয়ে আনিছা বেগমকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে তাকে খুঁজতে থাকে। এ সময় এদের গালাগালির শব্দ পেয়ে আনিছার স্বামী কৃষক আবুবকর এশার নামাজ আদায় করে বাড়িতে এসে আনিছাকে খুঁজার কারন জিজ্ঞেস করলে তারা ওই কৃষক আবুবকরকে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। এ সময় আবুবাক্কারের ভাতিজা স্বজীব বাঁধা দিতে গেলে তাকেও মারধোর করে হামলাকারীরা। পরে জ্ঞানহারা অবস্থায় আবুবক্করকে তার বাড়ির আঙ্গিনায় ফেলে চলে যায় তারা। এ অবস্থায় স্থানীয়রা আবুক্করকে উদ্ধার করে ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ এণ্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে নিহতের হিতাকাঙ্ক্ষীরা উত্তেজিত হয়ে রিসাদ, বাবুল ও পারভেজদের বসত ঘরে ও জিনিস পত্রে আগুন ধরিয়ে দেয়। ন্যাক্কারজনক এ ঘটনায় নিহতের পুত্র আয়ুর্বেদীক ডাক্তার মোঃ বায়েজিদ মিয়া (৩০), নিহতের বোন শামসুন্নাহার (৪৫), চাচাতো ভাই মোঃ জীবন মিয়া (৫৫) ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী সেলিনা (৪৫) সহ এলাকাবাসী তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে হাত্যাকারীদের বিচারের দাবী জানান। অপরদিকে রিসাদের বোন রকসী আক্তার (২৫) বলেন, আবুক্করের বাড়ির লোকজন তদের বাড়িতে এসে তিনটি বসত ঘরে প্রবেশ করে প্রথমে নগদ টাকা স্বর্ণালংকার ও জিনিসপত্র লুটপাট করে। পরে এসব বসতঘরে আগুন ধরিয়ে দেন তারা। এতে তাদের অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির হয়।
এ ব্যাপারে কুলিয়ারচর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা আবুবকরের নিহতের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের জানান, আবুবকরের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। লিখিত কোন অভিযোগ না পাওয়ায় এখনো কোন মামলা রুজু করা হয়নি।