শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:২২ পূর্বাহ্ন

কিশোরগঞ্জে ডাকাত আতংকে নির্ঘুম গ্রামবাসী

কিশোরগঞ্জে ডাকাত আতংকে নির্ঘুম গ্রামবাসী

দর্পন ঘোষ (কটিয়াদী) কিশোরগঞ্জ :
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার জালালপুর এবং লোহাজুরী ইউনিয়নে গত এক সপ্তাহে তিনটি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। তাছাড়া আরো কয়েকটি বাড়িতে হানা দিলেও গ্রামবাসীর প্রতিরোধের মুখে ডাকাতদল ব্যর্থ হয়ে ফিরে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। বর্তমানে আতংকিত এলাকাবাসী দলবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধের উদ্যোগ নিয়েছে। গভীর রাতে ডাকাত আক্রমনের আভাস পেলেই শুরু হয় মাইকিং। শুরু হয় মানুষের ছুটাছুটি হইহুল্লো কিন্তু কৌশলী ডাকাতদলের সদস্যরা পার পেয়ে যাচ্ছে সুকৌশলে। এলাকাবাসীর ধারনা ডাকাতদলের সাথে স্থানীয় চক্রের যোগসাজস রয়েছে। যে কারণে মানুষ জেগে উঠলে স্থানীয় চক্রের সহযোগিতায় আত্মগোপনে চলে যায় ডাকাতদল। ভূক্তভোগী কেউ মামলা করতে চান না। ধারণা করা হয় ডাকাতরা ভয়ভীতি দেখিয়ে গেছে।

জানা যায়, গত ৩ জানুয়ারী সোমবার জালালপুর ইউনিয়নের উত্তর চরপুক্ষিয়া গ্রামের প্রবাসী তোফাজ্জল হোসেনের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। উক্ত বাড়িতে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে বাড়ির লোকদের জিম্মি করে প্রচুর পরিমান স্বর্ণালংকার ও টাকা পয়সা লুটে নেয় সংঘবদ্ধ ডাকাতদল। তার একদিন পরই দক্ষিণ জালালপুর গ্রামের সৌদি প্রবাসী কাসেমের বাড়িতে হানা দিয়ে টাকা পয়সা ও স্বর্ণালংকার লুটে নেয়। সৌদি প্রবাসী কাসেম মিয়া টাকা স্বর্ণালংকার দিতে না চাইলে তাকে মারধর করে আহত করে। এ সময় তার মা বোনকেও মারধর করে স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। একই দিন রাতে নায়েবের বাড়ি নামে পরিচিত মরহুম চান মিয়ার বাড়িতে হানা দেয় ডাকাতদল। সেখান থেকেও বেশ কিছু টাকা পয়সা নিয়ে যায়। তার পরের রাতে উত্তর চরপুক্ষিয়া গ্রামের দুলালের বাড়িতে হানা দেয়। কিন্তু গ্রামবাসীর প্রতিরোধের কারণে ডাকাতরা পালাতে বাধ্য হয়। গত রোববার গভীররাতে লোহাজুরী ইউনিয়নের দশপাখি গ্রামে ডাকাতের আক্রমন হয়েছে এমন সংবাদে আশপাশের এলাকায় মাইকিং শুরু হলে প্রতিরোধের জন্য গ্রামবাসী লাঠি সোটা নিয়ে ছুটাছুটি ও হইহুল্লা শুরু করে। এতে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। গ্রামবাসীর ছুটাছুটি আর হইহুল্লোরের কারণে কৌশলে ছটকে পড়ছে ডাকাত দলের সদস্যরা। এহেন পরিস্থিতিতে জালালপুর ও লোহাজুরী ইউনিয়নবাসীদের কাটছে নির্ঘুম রাত। তারা রাত জেগে দলবদ্ধ হয়ে পাহাড়া দিচ্ছেন।

চরপুক্ষিয়া গ্রামের ফারজানা খাতুন বলেন, আমি রাতের বেলায় রাস্তায় কিছু মানুষের আনাগোনা দেখতে পাই। এর কিছুক্ষন পরেই মানুষের হইচই শব্দশুনে জানালা দিয়ে দেখি কিছু লোক নদীতে নেমে গেছে। বিষয়টি কারা করছে, কেন করছে তদন্ত করে বের করা দরকার। মানুষের মাঝে চরম ভীতির সৃষ্টি হচ্ছে।

লোহাজুরী দশপাখি গ্রামের ইউপি সদস্য স্বপন মিয়া ও নব নির্বাচিত সদস্য মাসুদ রানা বলেন, এলাকায় নেশা খোড়ের সংখ্যা বেড়ে গেছে। নেশার টাকার জন্য ডাকাতির ঘটনা বেড়ে যাওয়ার ধারণা পোষণ করেন তারা।
জালালপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাপ মিয়া বলেন, স্থানীয় চক্রের সহযোগিতায় ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। গ্রামবাসী জেগে উঠলে তাদেরকে আর কোথাও পাওয়া যায় না। স্থানীয় চক্রের সদস্যরা তাদেরকে আত্মগোপনে সহযোগিতা করছে।
কটিয়াদী মডেল থানার ওসি এসএম শাহাদত হোসেন বলেন, ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কিছু লোক গ্রামবাসীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। পুলিশ প্রতিরাতেই এলাকাগুলোতে টহল দিচ্ছে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে অনুসন্ধান করে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে।

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana