বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫৩ পূর্বাহ্ন

কারা পাচ্ছেন একুশে পদক : বৈঠকে বসছেন সরকারি মহল

কারা পাচ্ছেন একুশে পদক : বৈঠকে বসছেন সরকারি মহল

একুশে ডেস্ক:
কার ভাগ্যে আছে এবারের একুশে পদক। ফেব্রুয়ারি মাস আসতে এখনও বেশ দেরি। এরপরও এ নিয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন মহলে আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে সরকারি মহল আজ বসছেন কারা পেতে পারেন তা নিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করতে। জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি বেলা ৩টায় এই সভা আহ্বান করেছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। এই কমিটি বিচার বিশ্লেষণ করে প্রধানমন্ত্রী বরাবর তাদের সুপারিশ পাঠাবেন। প্রধানমন্ত্রী সুপারিশ করা তালিকা থেকে ইচ্ছে করলে বাদ দিতে পারেন। আবার নতুন করে কোনো নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়ার এখতিয়ার একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর। তিনি চূড়ান্ত করে অনুমোদন দিলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দেবে। এরপরই সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় তাদের সুবিধাজনক সময়ে প্রচার করবেন।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজ্জামেল হকের সভাপতিত্বে আজকের সভায় ১২ জন মন্ত্রীর মধ্যে একজন মন্ত্রীর না থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। কমিটিতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোট ৩৮ জনের নাম উপস্থাপনা করা হবে বলে একাধিক সূত্রে আভাস পাওয়া গেছে।
ভাষা আন্দোলনে চারজনের নাম উপস্থাপন হতে পারে। এর সবাই মরণোত্তর হিসেবে বিবেচিত। এর মধ্যে রয়েছেন- আবদুল বারী, মোস্তফা এমএ মতিন, বদিউল আলম চৌধুরী ও মির্জা তোফাজ্জল হোসেন মুকুল। শিল্পকলায় ৮ জনের মধ্যে ৪ জন মরণোত্তর হিসেবে বিবেচিত। মরণোত্তরদের মধ্যে রয়েছেন- অভিনয়ে মাহমুদ সাজ্জাদ এবং খালেদ মাহমুদ খান, সঙ্গীতে জালালউদ্দীন খা এবং কবি মোসলেমউদ্দিন। এ ছাড়াও সঙ্গীতে রয়েছেন- মুনশী ওয়াদুদ, ইকবাল আহমেদ, মাহমুদুর রহমান বেণু ও নাটকে ম. হামিদ।
মুক্তিযুদ্ধে ৬ জনের মধ্যে দুজন পাচ্ছেন মরণোত্তর পদক। তারা হলেন- সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী ও রফিকউদ্দিন ভূঁইয়া। অন্যদের মধ্যে রয়েছেন- পঙ্কজ ভট্টাচার্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ অধ্যক্ষ মো. মতিউর রহমান, আমজাদ আলী খন্দকার, কিউ এবিএম রহমান।
সাংবাদিকতায় রয়েছেন তিনজন। তারা হলেন- আবেদ খান, মনজুরুল আহসান বুলবুল ও মো. শাহ আলমগীর। মো. শাহ আলমগীর ইতোমধ্যে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। গবেষণায় রয়েছেন দুজন। একজন হলেন নূহউল আলম লেলিন ও অন্যটি হচ্ছে প্রতিষ্ঠান। যে প্রতিষ্ঠানের নাম হলো বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট। শিক্ষা ক্ষেত্রে রয়েছেন ৪ জন। আর একটি হচ্ছে প্রতিষ্ঠান। শিক্ষায় প্রফেসর ড. শিরীন আখতার, অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক, অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ ও অধ্যাপক ড. এ কে আব্দুল মোমেন। আর প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
সমাজসেবায় রয়েছেন ৪ জন। এর মধ্যে দুজন পাচ্ছেন মরণোত্তর পদক। দুজনের একজন হলেন শামসুন্নাহার রহমান পরান ও অন্যজন হলেন প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী। সমাজসেবায় ৪ জনের মধ্যে বাকি দুজন হলেন সংঘরাজ জ্ঞানশ্রী মহাথের ও এসএম আব্রাহাম লিংকন।
রাজনীতিতে একজন। আর তিনি হলেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি মরণোত্তর হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন। গত বছরেও তিনি সুপারিশের তালিকায় ছিলেন বলে জানা গেছে। ভাষা ও সাহিত্যে রয়েছেন ৪ জন। এই চারজনের মধ্যে দুজনের নাম অবশ্য গত বছরই সুপারিশের তালিকায় ছিল বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে রয়েছেন কামাল চৌধুরী ও অধ্যাপক আবদুস সেলিম। নতুনভাবে নাম এসেছে ঝর্ণা দাশ পুরস্কায়স্থ ও আফরোজা পারভীনের।
১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতির স্মরণে ও তাদের আত্মত্যাগের মহিমা চিরজাগ্রত রাখতে একুশে পদক রাষ্ট্রীয় পদক প্রবর্তন করা হয়। নীতিমালা অনুযায়ী ভাষা আন্দোলন, শিল্পকলা, মুক্তিযুদ্ধ, সাংবাদিকতা, গবেষণা, শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, অর্থনীতি, সমাজসেবা, রাজনীতি, ভাষা ও সাহিত্য ছাড়াও সরকারের নির্ধারিত অন্য যেকোনো ক্ষেত্রে ২১ সংখ্যক ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে একুশে পদক দেওয়া যাবে।
একুশে পদক সংক্রান্ত বাছাই কমিটি চলতি বছরের জন্য মোট ১৮০টি প্রস্তাব পেয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে গত বছরের সুপারিশ করা ২৮টি। এর মধ্যে যাচাই-বাছাইয়ের পর ৩৮টি প্রস্তাব জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।
Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana