রবিবার, ১১ মে ২০২৫, ১২:৪৩ অপরাহ্ন

দু’টি গান ও একটি দেশের জন্ম

দু’টি গান ও একটি দেশের জন্ম

’৪৮ সাল থেকেই বাংলা ভাষা বিরোধী চক্রান্ত শুরু হয়। কিন্তু অবদমিত বাঙালী জাতি এই সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই একতাবদ্ধ হতেশুরু করে। যার ফলশ্রুতিতেই ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্ররা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবীতে ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠন করে এবং আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকে। সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দের মধ্যে হাসান হাফিজুর রহমান, আব্দুল গাফফার চৌধুরী, অলি আহাদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, জহির রায়হান, গাজীউল হক, কমরেড তোয়া, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস প্রমুখের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। অত:পর ’৫২ সালে সেই রক্তঝরা ২১শে ফেব্রুয়ারিতে সরকারি পেটোয়াবাহিনী তাদের বুলেটে সালাম, বরকত, শফিক, জব্বারের মতো ভাষা সৈনিকদের রক্ত ঝরাল। জাতির মহান সন্তানরা প্রাণ হারাল। শুধু তাই নয়, আব্দুল গাফফার চৌধুরী, তাজউদ্দিন আহমেদ, জহির রায়হান প্রমুখেরা শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে, জেলে বন্দী হলো। তখন ক্ষোভে-জিদে আব্দুল গাফফার চৌধুরী (পরবর্তীকালে বিশিষ্ট কলামিষ্ট) দঁড়ি হাতে-শিঁকল পায়ে হাসপাতালের বেডে অসুস্থ অবস্থায় লিখে বসল: “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি তোমাদের ভুলিতে পারি..।” পরবর্তীকালে বিশিষ্ট সুরকার শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ মাহমুদ এটাকে প্রার্থনা সঙ্গীতের ন্যায় সুর প্রদান করে একটি আবেগময় দেশাত্মকবোধক গানে রূপান্তরিত করল। উল্লেখ্য যে, পশ্চিম পাকিস্তানীদের শোষন ও শাসনের বিরুদ্ধে বিশেষ করে ’৬২ সনে শিক্ষানীতি বিরোধী আন্দোলন ’৬৯ এর গণ অভূত্থ্যান ও ছাত্র সমাজের ১১ দফা দাবী, ’৭০এর সাধারণ নির্বাচন ও আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের পেছনে এই গানের প্রেরণা রণতুর্যের মতো উৎসাহ জুগিয়েছিল। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় এই গানটি বিশেষভাবে গনজাগরণ সৃস্টি করেছিল।
উল্লেখ্য যে, মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত বিখ্যাত সুরকার আপেল মাহমুদের কণ্ঠে গাওয়া “মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি..।”
এ গানটি এ দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের রণক্ষেত্রে অসম সাহস জুগিয়েছিল।

 

শাফায়েত জামিল রাজীব
প্রধান সম্পাদক
একুশে টাইমস্ বিডিডটকম

 

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana