একুশে ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেনের প্রশাসন গত ১০ ডিসেম্বর দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত এলিট ফোর্স র্যাবের বর্তমান ও সাবেক সাত কর্মকর্তার ওপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তার পেছনে কাজ করছে রাজনীতি। এই নিষেধাজ্ঞার পেছনে যতই মানবাধিকারের দোহাই দেখানো হোক প্রকৃতপক্ষে বিষয়টি ভূ-রাজনৈতিক। ঢাকাকে চাপে রাখতেই ওয়াশিংটন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এবং সামনে এমন নিষেধাজ্ঞা ধারাবাহিকভাবে আরও আসতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ঢাকার একাধিক কূটনীতিক এই প্রতিবেদককে জানান, নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনা করার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে যে চিঠি দিয়েছেন তাতে এই ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার উপাদান যুক্ত হয়েছে। তবে এতে নিষেধাজ্ঞা সহসা উঠে যাবে, এমন না ভাবাই ভালো। কারণ যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে চাপে রাখতেই এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর বলেছেন যে, আমেরিকা ইজ ব্যাক অর্থাৎ ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্ব রাজনীতি থেকে যেভাবে আমেরিকাকে গুটিয়ে নিয়েছিল, সেখানে বাইডেন এসেই ঘোষণা দিয়েছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র আবার বিশ্ব নিয়ন্ত্রণের চালকের আসনে ফিরে এসেছে। এ ক্ষেত্রে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক নীতি-পরিকল্পনা আছে। এরই মধ্যে এই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি উত্তেজনায় জড়িয়ে পড়ছে এবং এই অঞ্চলের রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বিভাজন দেখা যাচ্ছে, যাকে এক রকম শীতল যুদ্ধ বলা হয়। এখানে যুক্তরাষ্ট্র তাদের পাশে বাংলাদেশকে ঘনিষ্ঠভাবে পেতে চায়, এ জন্যই চাপ দেওয়া হচ্ছে।
ওই কূটনীতিকরা আরও জানান, এই নিষেধাজ্ঞা সহসা উঠে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এরপর রাজনীতিবিদ, সংসদ সদস্য- এদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। এর আগে, বিভিন্ন সময়ই একক ব্যক্তি হিসেবে একাধিক রাজনীতিবিদ ও সংসদ সদস্যের যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বাতিলের রেকর্ড আছে। একক ব্যক্তি হিসেবে বাতিল হওয়াতে সেগুলো আলোচনায় উঠেনি। যেমন শামীম ওসমানের ক্ষেত্রে ২০১৫ সালের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বাতিল হয়। তার বিরুদ্ধেও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ছিল।