শনিবার, ২৭ Jul ২০২৪, ০৫:৩৯ পূর্বাহ্ন

পারিবারিক পুষ্টি বাগানে সফল কিশোরগঞ্জের সাদী

পারিবারিক পুষ্টি বাগানে সফল কিশোরগঞ্জের সাদী

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

কিশোরগঞ্জের সদর উপজেলার মহিনন্দ ইউনিয়নের গোয়ালাপাড়া গ্রামের চাষী আমিনুল হক সাদীর পারিবারিক পুষ্টি বাগান ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। স্থানীয়ভাবে পরিবারের পুষ্টির যোগান দিচ্ছে এসব বাগানের টাটকা সবজি। অনাবাদি পতিত জমি, বসতবাড়ির আঙিনায় ও খোলা জায়গায় কৃষকরা স্বাচ্ছন্দ্যে পুষ্টি বাগান করছে এমন চিত্রই সরেজমিনে দেখা গেছে।

পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন প্রকল্পের আওতায় কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মডেল মহিনন্দ ইউনিয়নের ভাস্করখিলা ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার রুনা আক্তার জানান, সদর উপজেলার ৪২টি পারিবারিক পুষ্টি বাগান সার্বক্ষণিক তদারকি করা হয়। এরমধ্যে আমিনুল হক সাদীর বাগানটি আমার ব্লকে তাই নজরদারীও বেশি। সাদী ভাই আমার পরামর্শক্রমে গত সেপ্টেম্বর মাসে উপজেলা কৃষি অফিসের হল রুমে আয়োজিত প্রশিক্ষণে অংশ নিয়ে উদ্বুদ্ধ হলে আমরা অক্টোবরে প্রয়োজনীয় বীজ দিয়ে বাগানটি তৈরীতে সহায়তা করি। তিনি আরও জানান, অনাবাদি, পতিত ও বসতবাড়ির অব্যবহৃত জমি ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব। এতে একদিকে পারিবারিক পুুষ্টির চাহিদা পূরণ হচ্ছে অন্যদিকে মশলা জাতীয় ফসলেরও উৎপাদন বাড়ছে। পারিবারিক পুষ্টি বাগানের যাবতীয় ব্যয় সরকারের তরফ থেকে বহন করা হয়।

মহিনন্দ ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কৃষক মোঃ কামাল উদ্দিন জানান, তার বসতবাড়িতে সবজি চাষ করে পরিবারের পুষ্টির চাহিদা মিটিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। আমিনুল হক সাদীর প্রতিষ্ঠিত মহিনন্দ ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণ পাঠাগারের আঙ্গিনায় সারি সারি বেডে সুন্দর শাক সবজির বাগান যেকারও মন কাড়বে। আমি তার সার্বিক সফলতা কামনা করছি।

সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. জামাল উদ্দিন জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা রয়েছে ‘এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে।’ সে মোতাবেক আমরা পারিবারিক সবজি ও পুষ্টির চাহিদা মেটাতে কৃষকদের বসতবাড়ির আঙিনায় অনাবাদি ও পতিত জমিতে প্রকল্পের সহযোগিতায় ও উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে সবজি চাষের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের সদর উপজেলায় ৪২টি পরিবারে এ বাগান স্থাপনে সহায়তা করেছি। মহিনন্দের আমিনুল হক সাদীর বাগানটি অত্যন্ত সুন্দর পরিবেশে স্থাপিত হয়েছে। এ বাগানটি সকলের দৃষ্টি কেড়েছে।

চাষী আমিনুল হক সাদী বলেন,কৃষিবান্ধব সরকারের এ প্রকল্পটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। কৃষক কৃষাণীদেরকে প্রশিক্ষিত করে প্রয়োজনীয় বীজ সহায়তা দিচ্ছে। পারিবারিক পুষ্টি বাগানের এ উদ্যোগটি প্রশংসনীয়। আমি কৃষি বিভাগের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজের পাঠাগারের আঙ্নিায় পরিত্যক্ত জমিতে উদ্যোগ নেই পুষ্টি বাগান স্থাপনের। আমার বাগানে লাউ,কলমি, ডাটা, লাল শাক, পালং শাক, মূলা, সিম ও পুই শাক আবাদ করে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারজাত করনেও আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছি। তিনি আরও জানান, আমার প্রতিষ্ঠিত মহিনন্দ ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণ পাঠাগার ও যুব উন্নয়ন পরিষদ কার্যালয়ের আঙ্গিনায় আমার নামেই সাদী সমন্বিত কৃষি খামার ও বনায়ন নামে একটি প্রতিষ্ঠান শুরু করি। পরবর্তীতে আরও সম্প্রসার করে মৎস্য চাষসহ কৃষিতে জোরালো হয়ে শাক সবজিসহ বিভিণœ ফসল আবাদে সক্রিয় হই।

এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে মানুষের পুষ্টিহীনতা দূর হওয়ার পাশাপাশি খাদ্যনিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে। এ ছাড়া দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি পুষ্টি চাহিদাও পূরণ হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana